October 12, 2024
আঞ্চলিক

ডুমুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি থাকলেও চালু নেই বেসরকারী ডায়াগনস্টিকের পোয়াবারো

 

চিকিৎসক ২২, নার্স ২২, ভর্তি রোগী ৬

 

মো: রোমেল হোসেন, ডুমুরিয়া

আমার পরিচিত রোগীকে কেন আপনি অন্য ডায়াগনস্টিকে ইজিসি করাতে পাঠালেন। আমি তো কম টাকা নিয়ে ইসিজি করতে পারতাম। শুধুমাত্র কমিশনের জন্য কেন এটা করলেন। আর ইসিজি করতে পাঠানো উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার বলছেন কোথায় কার কাছে পাঠালাম এটি বিষয় নয়। কাদের পরিক্ষার রিপোর্ট ভাল হয় সেটা বিবেচনা করেই ইসিজি করতে পাঠানো হয়েছে।’ এটি শনিবার  বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিত্র।

হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন। রয়েছেন নার্স ও প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্র। বিন্তু টেশনিশয়ান না থাকায় সেসকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় না। ফলে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের হাসপাতালের বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরীক্ষা বাইরে থেকেই করে আনতে হয়। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক রয়েছেন ২২ জন, নার্স ২২ জন। ভর্তিকৃত রোগী ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৬ জন।

জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার চিত্র দেখতে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় জরুরী বিভাগে হই হট্টগোল। এগিয়ে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের পাচিল ঘেষে স্থাপিত একটি বেসরকারী ক্লিনিকের মালিক জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার গোবিন্দ মন্ডলের ব্যবস্থাপত্র দেয়া সাহস গ্রামের কারিমুল ইসলাম (৫৫) নামে এক রোগীর ইসিজি রির্পোট। রির্পোটটি তিনি হাসপাতালের সামনে ফাতেমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করাতে বলেন। সেখানে রোগীর কাছ থেকে নিয়েছে ৩০০ টাকা। পাশের নার্গিস সার্জিক্যাল ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক গোবিন্দ মন্ডলের কাছে জানতে চান কেন তাকে ফাতেমা ক্লিনিকে পাঠানো হল। তিনি কম টাকায় করাতে পারতেন। তাছাড়া রোগী তার আত্মীয়।

ডুমুরিয়া হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় পরিক্ষা নিরীক্ষার একটি চার্ট টানানো রয়েছে। যেখানে রক্ত, মল-মূত্রের ২৫ প্রকারের বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করানো এবং মূল্য তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ শোভনা গ্রাম থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আসা হানিফ (৪৮) বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিলে তাকে বেশ কয়েকটি পরিক্ষা দেয়া হয়। যার মধ্যে ১টি পরিক্ষা করা যাবে অন্যগুলো বাইরে থেকে করাতে হবে দায়িত্বরত প্যাথলজিস্ট তাকে জানান।

এ বিষয়ে হাসপাতালের প্যাথলজিস্ট রায়হান আল রশিদ জানান, প্যাথলজির বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করতে যে উপকরণ প্রয়োজন তার বেশির ভাগই নেই। ২৫ প্রকারের উপকরণের মধ্যে মাত্র ৬টি লিজেন্ড (উপকরণ) রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ সুফিয়ান রোস্তম এ বিষয়ে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেয়ার মত প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন। তাছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রেসহ বেশ কিছু পরিক্ষা নিরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু টেশনিশিয়ান না থাকায়  রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না। রোগী কম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন শীতকালে ভর্তিরোগীর সংখ্যা কম হলেæ বর্হিবিভাগে গড়ে প্রতিদিন ২ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি বলেন সার্জারী বিশেষজ্ঞ ও এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালে অপারেশন করা সম্ভব হয় না।

খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডা: সুজাত আহমেদ বলেন, হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক রয়েছেন। তবে প্রয়োজনীয় টেশনিশিয়ান না থাকায় পরিক্ষা নিরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। জনবল সঙ্কট দুর করতে মন্ত্রণালয়ে দাপ্তরিক পত্র দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *