জিপিএ-৫ মাথা থেকে বের করে দেওয়া উচিত : শিক্ষামন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পাবলিক পরীক্ষাসহ সমাপনী পরীক্ষাগুলোর ফলাফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি নিয়ে মাতামাতি না করে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকশিত করতে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। আগামী বছর থেকে অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল ৫ ভিত্তিক জিপিএর বদলে ৪ ভিত্তিক জিপিএতে দেওয়া শুরু করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
জেএসসি-জেডিসিতে এবার সম্মিলিতভাবে ৮৭ দশমিক ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৮ হাজার ৪২৯ জন। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
দীপু মনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা যত কম জিপিএ-৫ নিয়ে কথা বলি তত আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ভালো। আমাদের জিপিএ-৫ এর উন্মাদনাৃ এটি দিয়ে আমরা আমাদের শিশুদের, শিক্ষার্থীদের পুরো শিক্ষা জীবনটাকে একেবারে নিরানন্দময়তো করছেই, তার সঙ্গে বিষিয়ে দিচ্ছি প্রায়। তাদের উপর যে অবিশ্বাস্য রকমের চাপ, পরিবারের দিক থেকে, বন্ধু-বান্ধবের দিক থেকে, জিপিএ-৫ই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না।
দীপু মনি বলেন, জিপিএ-৫ জিনিসটা আসলে আমাদের মাথা থেকে বের করে দেওয়া উচিত। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে শিখছে কি না, তাদের নিজেদের যে প্রতিভা আছে সেটি বিকশিত করার ক্ষেত্রে আমরা তাদের সহযোগিতা করতে পারছি কি না, এই বিষয়গুলোই এখন মুখ্য হওয়া উচিত।
পাবলিক পরীক্ষার বিষয় কমানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা কিছু বিষয় এখন ধারাবাহিক মূল্যায়নে নিয়ে এসেছি। এক সময় ধারাবাহিক মুল্যায়নে বাচ্চারা সে কাজগুলো না করেই নম্বর যুক্ত হয়ে যেত, এ রকমই বলা হত। এখন আর তার কোনো সুযোগ থাকছে না।
নতুন এই ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাইলটিং হয়েছে, আমরা চালু করছি, সেখানে কিন্তু তাদের প্রতিটি কাজই প্রতিদিন করতে হবে এবং শিক্ষকদের সেগুলো ডিজিটালি ইনপুট দিয়ে দিতে হবে। এখানে ভুল কিছু করার সুযোগ নেই।
দীপু মনির ভাষ্য, শিক্ষার ক্ষেত্রে তারা গুণগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন, মানের উন্নয়ন ঘটানোর চেষ্টা করছেন। সেখানে পুরো মাইন্ডসেটটা পরিবর্তন করে দেখতে হবে কোন কোন বিষয়গুলোতে জোর দেব, কোনগুলোকে বড় করে দেখব।
অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল ৫ ভিত্তিক জিপিএর পরিবর্তে ৪ ভিত্তিক জিপিএতে করার সিদ্ধান্ত ২০২০ সাল থেকে কার্যকর করা হতে পারে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম এ বছর কার্যকর করতে পারি কি না, কিন্তু মনে হল এবার করতে গেলে অনেক বেশি তাড়াহুড়ো হবে, তাড়াহুড়ো করে একটা জিনিস পরিবর্তন করা- এটা বোধহয় সমীচীন হবে না। আমরা পুরোটাই বিশ্লেষণ করে দেখে আগামী বছর থেকে শুরু করব বলে আশা করছি।
পাবলিক পরীক্ষা ছাড়া সমাপনী পরীক্ষাগুলোতে পুরো গ্রেডিং সিস্টেমটা তুলে দিয়ে কীভাবে মূল্যায়ন করতে পারি সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।