জনসভা হবে খালেদার মুক্তির বড় বার্তা: আমীর খসরু
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর পূর্তির দিন শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভাকে তার মুক্তির আন্দোলনে বড় ধরনের বার্তা হিসেবে দেখাতে চায় বিএনপি।
শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী একথা বলেন।
নেতাকর্মীদের জনসভায় উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন) শেষ করেছি, এখন আন্দোলনের ধারা একটা নতুন রূপ নেবে। এই আন্দোলনের ধারা যে নতুন রূপ নেবে সেখানে আমাদেরকে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
“আমরা এই জনসভাকে এমন একটি জনসভায় পরিণত করব, যে জনসভা থেকে মেসেজ যাবে সমস্ত দেশে-বিদেশে দেশনেত্রীর মুক্তি যাতে অতি সহসা হয়। সেটা আগামীকালের জনসভা থেকে বড় ধরনের একটা মেসেজ আমরা দিতে চাই।”
দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ঢাকা সিটির ভোটের অভিজ্ঞতা নিয়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আমীর খসরু বলেন, “গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আজকে জেলে থাকতে হচ্ছে। এর পেছনের কারণ হচ্ছে, আপনার ভোট তারা কেড়ে নেবে, আপনার মৌলিক অধিকার তারা কেড়ে নেবে, আপনার বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেবে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেবে। গণতন্ত্রসহ এসব অধিকার হরণ করা এবং দেশনেত্রীকে আটকে রাখার বিষয়টা আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
“যতদিন গণতন্ত্রের মা জেলে থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি মিলবে না, ততদিন জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পাবে না, তারা মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে না, বাক স্বাধীনতা ফিরে পাবে না, আইনের শাসন ফিরে পাবে না, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরে আসবে না।”জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া।
কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসা দেওয়া হয়। গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তিনি এই হাসপাতালেই আছেন তিনি।
‘স্টিল মিলে বিক্রি হোক ইভিএম’
ইভিএমের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, “আমি আগে বলেছিলাম, ইভিএম বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার জন্য। এখন সেটা বলছি না, কারণ বঙ্গোপসাগরে ফেললে সেটা পরিবেশ দূষণ হতে পারে।
”এখন বলব, এগুলো মন-সের দরে স্টিল মিলগুলোতে বিক্রি করে দেন, অন্তত দেশের কন্সট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির কিছু রড তৈরি হবে, আর কিছু স্টিলের ফার্নিচার তৈরি হবে। এটা দেশের অর্থনীতিতে হলেও কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার আরেকটা অস্ত্রের আমরা এখান থেকে বিলুপ্তি ঘটাতে চাই।”
সিটি নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ”ব্যালট পেপার বাদ দিয়ে ইভিএমে ভোট দেওয়ার যে উদ্দেশ্য এবং এটাতে আরো কত সহজে ইলেক্ট্রনিক পন্থাতে ভোট চুরি করা যায় সেটা একশ শতাংশ নির্বাচন কমিশনই আজকে প্রমাণ করে দিয়েছে।
“এখন ইভিএমে খালি টিপলেই নৌকায় ভোট পাওয়া যায়। যত টিপবেন, তত ভোট পাবেন। ঢাকা সিটিতে পাঁচ শতাংশের উপরে ভোট হয় নাই, এখন ২৪ শতাংশ দেখিয়ে দিয়েছে। আর কিছু দরকার নাই। আওয়ামী লীগ যে কারণে ইভিএম করেছে সেটা দেশবাসীর কাছে আজকে স্পষ্ট হয়ে গেছে।”
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতু্ল্লাহ, বিলকিস ইসলাম ও এলডিপি একাংশের মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম বক্তব্য দেন।