January 24, 2025
আঞ্চলিক

ছেলের করোনাভাইরাসের গুজবে সাতক্ষীরায় মায়ের মৃত্যু!

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রতন রপ্তান। আতœীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভারতে। সোমবার দুপুরে ভারত থকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। তবে গায়ে জ্বর ও সর্দি, কাশি থাকায় ভোমরা স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় জ্বর ও সর্দি কাশি থাকায় নেয়া হয় সদর হাসপাতালে।

এরই মধ্যে রতনের এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে তার করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। পুলিশ তাকে গুলি করে মেরে ফেলবে। একথা শুনেই চিন্তিত হয়ে পড়েন রতনের মা রেনুকা রপ্তান (৫৬)। রাত ১১.৪৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তিনি পাতাখালি গ্রামের বিমান রপ্তানের স্ত্রী।

পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, কিছুদিন আগে ভারতে আতœীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায় রতন। সোমবার ভোমরা বন্দর দিয়ে বাড়িতে আসার সময় সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকায় রতনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রক্ত নেওয়ার পর রতন বাড়ি ফিরে আসে। পরে খোঁজাখুজি শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। শ্যামনগর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাকেও ফোন করেন রতনের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে এলাকায় এক শ্রেণির মানুষ গুজব ছড়িয়ে দেয় রতনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। পুলিশ রতনকে গুলি করে মেরে ফেলবে। এসব শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রতনের মা রেনুকা। ওই রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় সাহা বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহে রতনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে সে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজাখুজি করা হয়। তবে রতনের শরীরে করোনাভাইরাসের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে গুজবের কারণে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত বলেন, রতনের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোনো জীবানু পাওয়া যায়নি। তবে এলাকার লোকের গুজবের কারনে তার মা হার্ট অ্যটাকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বিষয়টি মর্মান্তিক ও দু:খজনক।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *