চট্টগ্রাম সিটি ভোট: বিএনপির প্রার্থীর ৪ দাবি
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছেন মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে লিখিতভাবে এসব দাবি তুলে ধরেন তিনি।
তার দাবির মধ্যে আছে- ভোটের তারিখ পরিবর্তন, প্রতি বুথে সেনা নিয়োগ, প্রিসাইডিং অফিসারদের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার এখতিয়ার ১ শতাংশে কমিয়ে আনা এবং এনআইডি যাচাই করে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশ নিশ্চিত করা।
জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপির মেয়র প্রার্থী এসেছিলেন। নির্বাচনকে সুন্দর করতে তিনি কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। লিখিতভাবে দেওয়া সেই প্রস্তাব আমরা ঢাকায় পাঠিয়ে দেব।”
পরে ডা. শাহাদাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২৯ মার্চ ভোটের তারিখের আগে স্বাধীনতা দিবস এবং শুক্র-শনি মিলিয়ে টানা তিন দিন ছুটি। এই সময়ে যারা বাড়িতে বা বেড়াতে চলে যাবেন, ফেরার পর ভোটের দিন অফিস খোলা থাকলে তারা আগে অফিসেই যাবেন। ভোট দিতে আর যাবেন না।
“সেজন্য ভোটের তারিখ পিছিয়ে ৩১ মার্চ করতে বলেছি। একদিনের ব্যবধানে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
তিনি বলেন, সেনা সদস্যরা ইভিএমের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে পারলে ইভিএমের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাদের হাতে দেওয়া যায়।
“যেহেতু সিটি করপোরেশন নির্বাচন, তাই দেশের অন্য জেলা থেকেও নির্বাচন দেখতে লোক আসতে পারে। ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনে বাইরের জেলা থেকে লোক এসেছে। ভোট দেখতে এসে তারা গতবারের মত মারামারিতে অংশ নিলে সহিংস পরিস্থিতিতে ভোটাররা আর কেন্দ্রে আসবে না। তাই এনআইডি কার্ড দেখে কেন্দ্রে ভোটার প্রবেশ করাতে বলেছি।”
সিইসি বরাবর লেখা চিঠিতে শাহাদাত বলেন, “আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে জনগণ ভোট কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত হবে।”
তৃতীয় দাবিতে প্রিসাইডিং অফিসারের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ইভিএমে ভোট দেওয়ার এখতিয়ার ১ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিএনপির প্রার্থী বলেন, “সিটি করপোরেশনের প্রায় ২০ লাখ ভোটারের মধ্যে ৫ শতাংশ যদি প্রিসাইডিং অফিসারের আওতায় থাকে তাহলে ১ লাখ ভোট হয়। চাইলে তখন তারা কারচুপি করতে পারে, যেটাতে নির্বাচনের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হতে পারে।”
ইভিএমে ভোটের ক্ষেত্রে ভোটারের আঙুলের ছাপ কোনো কারণে না মিললে তার নামে ব্যালট ইস্যু হয় না। তখন প্রিসাইডিং অফিসার তার আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে সেই ভোটারের জন্য ব্যালট ইস্যু করতে পারেন। কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যার ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে তার এই ক্ষমতা ব্যবহারের অনুমতি আছে, যা নিয়ে শাহাদাতের আপত্তি।
চতুর্থ দাবিতে তিনি বলেন, “যেহেতু সম্প্রতি নির্বাচনগুলোতে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ভোটের পরিবেশ নষ্ট করছে, কাজেই এনআইডি কার্ড ছাড়া কেউ যাতে ভোট সেন্টারের গেইট থেকে ভিতরে ঢুকতে না পারে।
“ভোট কেন্দ্রের চারশ গজের মধ্যে কোনো বহিরাগত সন্ত্রাসী যাতে জড়ো হতে না পারে তার ব্যবস্থা ইসি এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে করতে হবে।”
ভোটাররা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী।