October 7, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খুলনা জেলা আ’লীগে অস্থিরতা, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে

জয়নাল ফরাজী

সম্মেলনের তিন মাস অতিবাহিত হলেও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। কমিটিতে পুনরায় স্থান পেতে ব্যাপক তৎপর হয়ে উঠেছেন সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি কতিপয় বিতর্কিত নেতা। অনেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আশীর্বাদ পেতে নেতার বাড়ি ও অফিসে নিয়োমিত হাজিরা দিতে গিয়ে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন। কেউ কেউ পৃথক ভাবে শীর্ষ দুই নেতার বিশ্বস্ততা অর্জনে কানভারি করছেন। ইতোমধ্যে একাধিকার মারামারি ঘটনাও ঘটেছে। ফলে জেলা আওয়ামী লীগে অস্থিরতার পাশাপাশি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্বও বাড়ছে।

দলের একাধিক সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে না থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি কতিপয় বিতর্কিত নেতা। এসব বিতর্কিতদের তৎপরতা এবং শীর্ষ দুই নেতার মাইম্যানে পরিণত হওয়ার অসম প্রতিযোগিতা ও অস্থিরতার নেপথ্যে রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে, সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সেখানে বসে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। অপরদিকে আইনী পেশার ব্যস্ত থাকায় সাংগঠনিক কর্মকান্ডে গতি আনতে পারছেন না দলটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী।

সূত্রগুলো নিজেদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নানা বিষয়ে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কানভারি করার পাশাপাশি নেতাদ্বয়ের মধ্যে দ্ব›দ্ব বা দূরত্ব সৃষ্টি করছেন। যার ফলশ্রæতিতে গত রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর কেসিসি মার্কেটের নিচে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা রূপসা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবার ও অধ্যক্ষ ফ. ম সালাম এর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। যা সোমবার বেশ কয়েকটি স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। উভয় নেতা সুজিত অধিকারীর অনুসারী বলে জানা যায়। যদিও পরবর্তীতে সুজিত অধিকারী বিষয়টি দুই নেতার মধ্যে মিমাংসা করেন। অপরদিকে গত ২৫ ফেব্রæয়ারী জেলা পরিষদের টেন্ডার জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত প্রচার সম্পাদক জলিল তালুকদারকে মারধর করে কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডে জড়িয়ে পরেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। যা জলিল তালুকদারের ফেসবুক পেজে উল্লেখ করা হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, গত বছর ১০ ডিসেম্বর খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগে শেখ হারুনুর রশিদ সভাপতি ও এ্যাড. সুজিত অধিকারী সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। সম্মেলনের তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও জেলার ৮টি উপজেলার সম্মেলন না করেই জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরীর অবশিষ্ট ওয়ার্ডে সম্মেলন হলেও উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন নিয়ে কোন উদ্যোগ নেই। এমনকি ৬৮টি ইউনিয়নসহ জেলার ওয়ার্ড কমিটির সর্বশেষ সম্মেলন কবে হয়েছে তার হিসেব নেই।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগে কোন কোন্দল নেই। অচিরেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে। তিনি বলেন, আমার জানামতে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি ফলে দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তা তাৎক্ষণিকভাবে মিটে গেছে।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *