April 10, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খুলনায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

এদিন সকাল আটটায় খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির পিতার ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ১৫ আগস্টে শাহাদত বরণকারী জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসময় পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন পতাকা ও স্বাধীন ভূখন্ড দিয়েছেন। স্বাধীন দেশে আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই, পরনের কাপড় ও তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর আগেও অনেকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন। শেখ মুজিব কখনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন, যা বাস্তবায়নের আগেই তিনি দুষ্কৃতিকারীদের হাতে নিহত হন। আজ তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনার ঐকান্তিক চেষ্টায় আমরা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। বাংলাদেশ আজ বিশে^র বুকে উন্নয়নের রোল মডেল।

অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। খুলনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গরীব দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং অসুস্থ্য অসহায় ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

কেসিসি’র উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ও মহানগরীর সকল মসজিদে দোয়া মাহফিলসহ বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। সকল সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ আলোচনা সভা, আবৃত্তি, রচনা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হামদ ও নাত প্রতিযোগিতা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। খুলনা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশু পরিবার ও ভবঘুরে আশ্রয় কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
জাতীয় শোক দিবসে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। খুলনার উপজেলাসমূহেও অনুরূপ কর্মসুচি পালিত হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *