খুলনায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত তিন লাখ মানুষ, দুইজনের মৃত্যু
প্রায় ৪৭ হাজার ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত
তলিয়ে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের
বেড়িবাঁধে ভাঙন, দুর্ভোগ চরমে
দ: প্রতিবেদক
খুলনায় রবিবার ভোরে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র আঘাতে ৯টি উপজেলার ৪৭ হাজার ২৭৫টি ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত— হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে পাঁচ শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের। বিভিন্ন উপজেলায় ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। গাছ চাপা পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার খুলনা জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখা জানায়, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে খুলনার ৯টি উপজেলায়ই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসকল উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নের ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ জন লোক ক্ষতিগ্রস্ত। এতে ৯টি উপজেলার ৪৭ হাজার ২৭৫টি ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৭ হাজার ৮২০টি ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৫টি। আর দাকোপ ও কয়রা উপজেলায় গাছ চাপায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। যার তালিকা ইতোমধ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
একাধিক সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে খুলনার কয়রা ও দাকোপ উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই কয়েক হাজার গাছপালাও পড়ে গেছে। মহানগরেও অনেক বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে আরও অনেক সড়কে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে রবিবার খুলনায় গাছচাপা পড়ে নারীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত দুইজন হলেন- খুলনার দাকোপ উপজেলার দক্ষিণ দাকোপ গ্রামের সুভাষ মণ্ডলের স্ত্রী প্রমিলা মণ্ডল (৫২) ও খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামের আলমগীর হোসেন (৩৫)।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল ওয়াদুদ জানান, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে প্রমীলা দক্ষিণ দাকোপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে ছিলেন। সকাল ৯টা-সাড়ে ৯টার দিকে নিজের বাড়িতে যান তিনি। সেসময় একটি গাছ তার উপরে পড়লে প্রাণ হারান প্রমীলা।
এদিকে দিঘলিয়া থানার ওসি মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামে সকাল ৯টার দিকে বাসার পাশে অবস্থান করছিলেন আলমগীর হোসেন। এসময় একটি সজনে গাছ ভেঙে তার ওপরে পড়লে আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, একই গ্রামে গাছ পড়ে আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
আমাদের কয়রা প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ তান্ডব চালিয়েছে খুলনার কয়রায়। ঝড়ের আঘাতে কয়রা সদর সহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি। হাজার হাজার গাছপালা ধবংসলীলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে মাছের অধিকাংশ ঘের ও ফসলি জমি। জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বহু এলাকায়। তার আগে থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে কয়রা। এজন্য ঝড়কবলিত কয়রাবাসী পড়েছে আরও দুর্ভোগে। পাউবোর বেঁড়িবাধে ভয়াবহ ফাটল ধরায় আতংকে রয়েছে উপকূলীয় কয়রাবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দিনগত রাতে উপকূলে আছড়ে পড়া বুলবুল রোববার ভোর থেকেই কয়রাজুড়ে তান্ডব চালায় বুলবুল। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়া এ উপজেলায় সকাল ১০টা পর্যন্ত তীব্র বাতাস ও ভারী বর্ষণ চলে। ঝড়ের কারণে কয়রা সদরের দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়। গাছ উপড়ে পড়েছে বহু এলাকায়।
কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জাফর রানা বলেন, কয়রায় ৭টি ইউনিয়নের অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। ঝড়ে এ সকল ইউনিয়নের আধাপাকা ঘরবাড়ি, এবং গাছপালা বেশি ভেঙে গেছে। তবে কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙেনি। এছাড়া অধিকাংশ সড়কে গাছ উপড়ে পড়েছে। তবে যান চলাচল রাখতে সড়কের গাছ সরিয়ে ফেলানো হয়েছে। বেসরকারি সংস্থার তথ্যমতে কয়রায় বুলবুলের আঘাতে ২৮ ঘরবাড়ি পুরো বিধ্বস্থ ও ৪ হাজার ৬ শ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে ১৭শ ২০ হেক্টর জমির আমন ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি ১ শ ৬০ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া মুরগীর ফার্মের ক্ষতি হওয়া ছাড়া হাঁস মুরগী ও ছাগলের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মাধ্যমিক ও মাদাসার ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার এস এম আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বুলবুলের আঘাতে কয়রায় ৩২শ ৪০টি মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪৪ কোটি টাকার মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, কয়রার ৭টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুর্ণবাসন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে সহযোগিতা করা হবে।
পাইকগাছা প্রতিনিধি জানান, পাইকগাছায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে ২ হাজার ঘর-বাড়ী। প্রায় দেড় হাজার ঘেরের কোটি কোটি টাকার চিংড়ী ও অন্যান্য মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর জমির আমন ও সবজি ফসল। বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ও ১৭শ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন। লন্ডভন্ড করে দিয়েছে হাজার হাজার গাছ-পালা। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বে সবধরণের প্রস্তুতি থাকায় দুর্যোগে কোন প্রাণহানী ঘটেনি বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন, সড়কে পড়ে থাকা গাছ পালা অপসারণ ও দূর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী ও ইউএনও জুলিয়া সুকায়না।
শনিবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপক‚লীয় অন্যান্য স্থানের ন্যায় অত্র উপজেলায় আঘাত হানে। রাতভর ঝড়ের গতিবেগ কম থাকায় রাতের তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রোববার সকাল থেকে ৯টা পর্যন্ত ঝড়ের গতি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মুশলধারে বৃষ্টিপাতও হয়। ফলে সকালের কয়েক ঘন্টার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা এলাকা। ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষ আগেভাগেই আশ্রয় কেন্দ্র সহ নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ায় কোথাও কোন প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে ১০টি ইউনিয়ন সহ একটি পৌরসভায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ী বিধ্বস্ত হয়, গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় আঁধাপাকা বাড়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হাজার হাজার বিঘা ঘের পানিতে ভেসে গিয়ে একাকার হয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। আমন ও সবজি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিধ্বস্ত হয়ে যায় গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। উপড়ে ও দুমড়ে মুচড়ে যায় হাজার হাজার গাছ পালা। এলাকার সকল সড়কে গাছ-পালা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। উপজেলার দেলুটির কালিনগর ও গড়ইখালীর শান্তা এলাকার ওয়াপড়ার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে মারাত্মক ক্ষতি হয়। ১০টার দিকে ঝড় থেমে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী ও ইউএনও জুলিয়া সুকায়না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ও ওয়াপদার বেড়িবাঁধ পরিদর্শন এবং দূর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে মোট আবাদী আমন ফসলের ২ হাজার ৭১৪ হেক্টর, সবজি ৫৬ হেক্টর ও ৯ হেক্টর পান ফসল আক্রান্ত হয়েছে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস ও সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এসএম শহিদুল্লাহ জানান, ৫ হাজার ১শ হেক্টর আয়তনের ১ হাজার ১৮২টি মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এসব ঘেরের চিংড়ি ও মাছ ভেসে গিয়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ রেজায়েত আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়ে পাইকগাছা-কয়রার ১ হাজার ৭৩৪ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কমপক্ষে ৯শ জায়গার তার ছিড়ে গেছে। ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে গেছে ১শ খুঁটি। পড়ে গেছে দেড়’শ খুঁটি। বিদ্যুৎ সংযোগ ও সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ১শ জন লোক রাতদিন কাজ করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, ঝড়ে উপজেলায় দেড় হাজার ঘর-বাড়ী সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ৬ হাজার আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ পূর্ব সব ধরণের প্রস্তুতি থাকায় এলাকায় কোন প্রাণহানী ঘটেনি। তবে গাছ-পালা, ঘর-বাড়ী, ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের আগে থেকেই সাধারণ মানুষের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা হয়। সড়কে পড়ে থাকা গাছ অপসারণ ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে দূর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে পরবর্তী সহায়তা প্রদান করা হবে বলে প্রশাসনের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তেরখাদা প্রতিনিধি জানান, গত রবিবার রাত ১২টার পর থেকে তেরখাদা উপজেলা বিভিন্ন স্থানে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে ভোর রাত থেকে ঝড়ো হওয়া শুরু হয়। সকাল ৯ টার পর থেকে ঝড়ের তিব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ থেকে ১১ টা পর্যন্ত ভয়ংঙ্কর রুপ ধারন করে এলাকার কাচা ঘরবাড়ী, পাছপালা, পানের বরজ ভেঙ্গেচুরে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় শিরিস গাছ, মেহগনিসহ অন্যান্য গাছপালা উপড়ে পড়ে গেছে। তেরখাদা উপজেলা আটলিয়া, রামমাঝি, জয়সেনা ও তেরখাদা নদীর পশ্চিম পার অবদা রাস্তার পাশ দিয়ে বড় বড় শিরিশ গাছ ভেঙ্গে রাস্তা উপর পড়ে জনগনের যাতায়াতের পথ বন্ধ সহ সমস্ত যানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে দেখা গেছে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে এবং খুটি উপড়ে পড়ে গেছে। তেরখাদা সেনের বাজার সড়কে গতকাল বিকেল ৫ পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঝুঁকি নিয়ে কয়েকটি অটোভ্যান ও ভ্যানগাড়ী চলাচল করতে দেখা যায়। উপজেলা সদরের পাশে ঋষি পাড়ায় ঝড়ো হাওয়া ঠান্ডায় শিবেন্দ্র নাথ ঋষি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তেরখাদা উপজেলা আগজড়া, বারাসাত, তেরখাদা, ছাগলাদাহ, সাচিয়াদাহ ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে গাছপালা, কাঁচা ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
তেরখাদা উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, তিনদিনের অতি বৃষ্টির পর ঝড়ো হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। অদ্যাবধি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে, বিদ্যুত বিভাগের তথ্যমতে জানাযায় আগামী ৩/৪ দিনের ভিতর সমস্ত উপজেলায় বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানায়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে তেরখাদা উপজেলায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
কপিলমুনি প্রতিনিধি জানান, কপিলমুনিতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। শনিবার শেষ রাতে শুরু হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বৃষ্টির সাথে ঝড় হাওয়া প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তান্ডব চালানোর ফলে এলাকার হাজার হাজার গাছ পালা ও কয়েক শত কাচা ও আধা পাকা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ছিড়ে গেছে বিদ্যুতের তার। রাস্তার উপর গাছ পড়ে অনেক রাস্তা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া কৃষকদের মাঠের ধান ঝড়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের কাজিমুছা গ্রামের লিলি নামের এক মহিলা ও দুই শিশু ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে গুরতর আহত হয়েছেন।
খানজাহান আলী থানা জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে খানজাহান আলী থানা এলাকার মিরের ডাঙ্গা, জামিয়া কারিমিয়া মাদরাসা, যোগীপোল, জাব্দিপুর, গিলাতলা গাজী পাড়া, গিলাতলা ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়া, শেখপাড়া, শিরোমণি পূর্বপাড়া, বিসিক শিল্প নগরী, মশিয়ালীসহ এলাকায় অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ী ও গাছ উপড়ে পড়েছে। ফুলবাড়ীগেটস্থ মীরেরডাঙ্গা পেট্টোলিয়াম সার্ভিসের সামনে তারকাটা ফ্যাক্টরীর গাছ ও পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনে খুলনা যশোর মহাসড়কের উপর গাছ পড়ে বেলা ১টা পর্যন্ত মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ থাকে।