কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের সাফল্য
পাইকগাছা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্র পাইকগাছার বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম উপায়ে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনে সাফল্য অর্জন করেছেন। দেশে প্রথম বারের মত হ্যাচারীতে উৎপাদিত কাঁকড়া পোনা মাঠ পর্যায়ের চাষীদের মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগ নেন কেন্দ্রের গবেষকরা। বুধবার সকালে লোনাপানি কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এলাকার বিভিন্ন চাষীদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কাঁকড়ার পোনা বিতরণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু।
এ সময় এমপি বাবু বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের মৎস্য সম্পদ ও গবেষণার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। গবেষকরাও উদ্ভাবন করেছেন নতুন নতুন প্রযুক্তি। উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করার ফলে দেশে ধান ও মাছের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। যার ফলে দেশের গ্রামীন অর্থনীতি এখন অনেক মজবুত।
কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলহাজ্ব সৈয়দ লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ লতিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী, মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী, কয়রার ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডঃ কুমারেশ সানা, ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন। বক্তব্য রাখেন, উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেবাশীষ মন্ডল, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোল্ল্যা এমএনএস মামুন সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগ নেতা আরশাদ আলী বিশ্বাস, ডাঃ শংকর দেবনাথ, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, যুবলীগনেতা এমএম আজিজুল হাকিম, চাষী তারক চন্দ্র সানা, আব্দুর রহমান, কমল মন্ডল, তাপস মন্ডল, মনোজ মন্ডল ও সুশান্ত সরদার।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের গবেষকরা বলেন, বিদেশে যেসব মৎস্য সম্পদ রপ্তানি হয় তার মধ্যে কাঁকড়া অন্যতম। চিন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, কানাডা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শীলা কাঁকড়ার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনের কোন প্রযুক্তি উদ্ভাবন না হওয়ায় এ যাবৎকাল প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরিত পোনার ওপর নির্ভর করতে হতো কাঁকড়া চাষ। বিষয়টি উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাঁকড়া ও কুচিয়ার ওপর বিশেষ গুরত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কাঁকড়া ও কুচিয়ার ওপর বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। অত্র প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্রে নির্মাণ করা হয় আধুনিক মানের কাঁকড়া হ্যাচারী। দীর্ঘ গবেষণার পর কৃত্রিম উপায়ে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনের কৌশল উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন কেন্দ্রের গবেষকরা। বর্তমানে পোনা বাঁচার হার ১০ শতাংসেরও বেশি, যা অত্যান্ত সন্তোষ জনক। কাঁকড়া পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করায় এখন থেকে আর প্রাকৃতিক উৎসের উপর নির্ভর করা লাগবে না এবং বাণিজ্যিক ভাবেও পোনা উৎপাদন ও চাষ করা যাবে। এ ধরণের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দেশের দক্ষিণ উপক‚লীয় অঞ্চলের কাঁকড়া চাষের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।