করোনা: নিজের হোটেলকে হাসপাতাল বানাচ্ছেন রোনালদো!
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে নিজের বাড়িতে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে ঘরে বসে থাকলেও করোনা প্রতিরোধে ভিন্নরকম এক উদ্যোগ নিলেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ উইঙ্গার।
জুভেন্টাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পর্তুগালে নিজের মালিকানাধীন হোটেলগুলোকে সাময়িকভাবে হোটেলে রূপান্তরিত করতে যাচ্ছেন রোনালদো।
পর্তুগালে অবস্থিত রোনালদোর হোটেলগুলো তার ‘সিআর সেভেন’ ব্র্যান্ডের অন্তর্গত। এই হোটেলগুলোতেই আপাতত বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। এমনকি চিকিৎসক ও স্টাফদের বেতনও নিজের পকেট থেকেই পরিশোধ করবেন তিনি।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে কিছু পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি। এসব পরামর্শ মেনে চলার জন্য আহবান জানিয়েছেন রোনালদো।
এক টুইটে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রোনালদো লেখেন, ‘বিশ্ব এখন খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যা আমাদের সবার কাছ থেকে বাড়তি গুরুত্ব আর মনোযোগ দাবি করে। আমি আজ আপনাদের সঙ্গে একজন ফুটবলার হিসেবে কথা বলছি না, বরং একজন সন্তান, একজন পিতা এবং একজন মানুষ হিসেবে কথা বলছি যে গোটা বিশ্বের আক্রান্ত হওয়ার এই ঘটনা নিয়ে শঙ্কিত।’
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে চলতে অনুরোধ করেছেন রোনালদো, ‘আমরা কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করব তা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।’
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন রোনালদোর ক্লাব সতীর্থ দানিয়েল রুগিনি। এরপর থেকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে আছেন রোনালদো। পরে রিয়াল মাদ্রিদের একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন আর্সেনালের কোচ মিকেল আর্তেতা ও চেলসির মিডফিল্ডার ক্যালাম হাডসন-ওডোইও। এরপর থেকে ইউরোপের সব ফুটবল লিগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে আছেন বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের ক্লাবের খেলোয়াড়রা।
করোনায় আক্রান্ত ও স্বজন হারানোদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড লেখেন, ‘মানুষের জীবন রক্ষা করা যে কোনো স্বার্থের ঊর্ধ্বে। যারা আপনজনকে হারিয়েছে, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আমার সতীর্থ দানিয়েল রুগানির মতো যারা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, আমি তাদের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা অন্যদের বাঁচাতে কাজ করে যাচ্ছেন, সেই অসাধারণ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি আমার সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। এর প্রভাব পড়েছে ফুটবল বিশ্বেও। বন্ধ হয়েছে ইউরোপের সব ফুটবল আসর। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালির। দেশটির প্রায় সব মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৪৪১ জনের। দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২১ হাজার ১৫৭ জন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, গত আড়াই মাসে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসের প্রভাবে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, সেই কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৯ জন। অবশ্য এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৩৮৭ জন।