February 19, 2025
লাইফস্টাইল

করোনায় যেসকল ভালো অভ্যাস গড়ে তুলেছে সবাই

করোনাভাইরাস নামক অদৃশ্য এক শত্রু আপনাকে ঘরে বন্দি করে রাখছে। আপনি প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাকে বিপর্যস্ত করে এই লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার। পৃথিবীর জন্ম থেকেই এমন অনেক লড়াই জয় করে এসেছে মানুষ। এই লড়াইয়েও শেষ পর্যন্ত জয় হবে মানুষেরই। তবু ঘরে বন্দি থেকে, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর খবর শুনতে নিশ্চয়ই কারো ভালো লাগে না! ভালো লাগে না সংক্রমিত হওয়ার ভয় নিয়ে এই দিনযাপন। তবু একটু খেয়াল করে দেখুন, এই করোনাভাইরাস আসায় আমাদের মাঝে কিছু ভালো অভ্যাসও কিন্তু তৈরি হয়েছে-

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: আমাদের জীবনযাপনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস খুব একটা ছিল না বললেই চলে। নিয়ম করে হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আগে যতটা উদাসীন ছিলাম, এখন তা একেবারেই নেই। বরং সময় নিয়ে হাত ধোয়া, পোশাক, ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা এখন প্রতিদিনের কাজ। করোনার কারণে এই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস খুব দ্রুত গড়ে উঠেছে।

স্বাস্থ্যকর খাবার: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে করোনাভাইরাসকে ঘায়েল করতে প্রায় প্রত্যেকেই চেষ্টা করছেন বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার। এতে করে শরীর সুস্থ থাকছে। দূরে থাকছে নানা অসুখও। এই অভ্যাসটিও খুব দ্রুত গড়ে উঠেছে।

সামাজিকতা: যদিও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে এবং বেশিরভাগ সচেতন মানুষ তা মেনে চলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে লাভই হয়েছে। এই সামাজিক দূরত্ব মূলত শারীরিক দূরত্ব। বরং একে অন্যের প্রতি সহানুভূতি, সহনশীলতা আগের থেকে বেড়েছে। মানুষ মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন অনেকে।

পারিবারিক বন্ধন: করোনাভাইরাস আমাদের ঘরমুখী করেছে। পরিবারকে সময় দেয়ার সময় বের করে দিয়েছে। যারা কাজের চাপে পরিবারের মানুষগুলোর সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলারও সময় পেতেন না তারা এখন মুখোমুখি বসে গল্প করার, ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করার সময় পাচ্ছেন। এটি আপনি মন্দের ভালো হিসেবে দেখতেই পারেন।

আত্মবিশ্বাস: যেকোনো ঝড়-ঝাপটা এলেই মানুষ নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝতে পারে। সে কতটা প্রতিকূল পরিবেশ পাড়ি দিতে পারবে তার ধারণা তৈরি হয়। বৈরি অবস্থায় টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন হয় প্রচণ্ড মানসিক শক্তির। করোনার কারণে তা মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকে থাকতেই হবে- এই মনের জোরই মানুষকে টিকে থাকতে সাহায্য করে।

অপচয় রোধ: করোনাভাইরাসের কারণে নানা রকম অপচয় রোধ হচ্ছে। বাড়িতে তৈরি করা খাবার খাওয়ার কারণে বাইরে খাওয়ার বাড়তি খরচটা বেঁচে যাচ্ছে। মানুষ শুধুমাত্র প্রয়োজনের জিনিসের জন্যই ব্যয় করছে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে চাহিদার কারণে অকারণ ব্যয় হয় অনেকটাই। যেটা ইচ্ছে করলেই আপনি সঞ্চয় করতে পারেন।

তড়িৎকর্মা: বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করছেন অনেকে। সাহায্যকারী না থাকায় বাড়ির কাজও করতে হচ্ছে অনেকটা। এতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু ভেবে দেখবেন, বাইরের কাজ সামলেও বাড়ির কোন কোন কাজ আপনিই করতে পারবেন, যাতে আপনার সঞ্চয় হবে।

নেশা ত্যাগ: লকডাউনের পরিস্থিতিতে নেশার দ্রব্য অপ্রতুল। অনেকেই এই সুযোগে নেশা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এটি অবশ্যই একটি ভালো অভ্যাস।

সঞ্চয়ী মনোভাব: করোনা আাতঙ্ক কাটলে বিশ্বজুড়ে বিরাট আর্থিক মন্দা আসতে চলেছে। সে কারণে হাতে যতটুকু অর্থ রয়েছে, তা বুঝে খরচ করার কথা ভাবছেন। অথবা সেই অর্থ সঠিক ভাবে সেভিংসের প্ল্যান করছেন। এই ছোট ছোট আত্মত্যাগ বা প্ল্যানিং যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আপনি বজায় রাখেন, তাহলেই সঞ্চয় হবে অনেকটা। আর প্রয়োজন ছাড়া খরচের প্রবণতা কমবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *