করোনাভাইরাস: দুই সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার দাবি বিএনপির
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো নভেল করোনাভাইরাস এখন বাংলাদেশে চলে আসায় সব স্কুল দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, স্কুল-কলেজ, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। অন্ততঃ প্রথম দিকে দুই সাপ্তাহ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। তারপর অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
আইইডিসিআর গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশে প্রথমবারের মত তিনজনের দেহে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানায়। এরপর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
সোমবার সচিবালয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধা রাখার মত পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।
আর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই তা নেওয়া হবে।
ফখরুলের যুক্তি, দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতেই প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি রুটিন জমায়েত হয়। শিশুদের পাশাপাশি অভিভাকরাও স্কুলে যাতায়াত করেন।
আর নভেল করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে যেহেতু জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, সেহেতু আপাতত দুই সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখাই নিরাপদ হবে বলে বিএনপি মনে করছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে যে প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল- সরকার তা নিতে ‘ব্যর্থতার পরিচয়’ দিয়েছে।
“আপনারা জানেন যে, তিনটি হাসপাতালকে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নেওয়ার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে কুর্মিটোলা হাসপাতাল।… ওই হাসপাতাল থেকে সাধারণ রোগীদের সরানো হয়নি। করোনাভাইরাস আর ডেঙ্গু তো এক জিনিস নয়। করোনাভাইরাস এতো ছোঁয়াচে যে, অন্যান্য রোগীরা সেখানে আক্রান্ত হয়ে পড়বেন।
“প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারের উচিত ছিল সেখান থেকে অন্য রোগীদের সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেখানে রাখার ব্যবস্থা করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা করা হয়নি। ডাক্তার ও নার্সদের যে ট্রেনিং দেওয়া দরকার তা এখনোও দেওয়া হয়নি।”
সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “আমরা যত দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত রোগী ও সাম্ভব্য আক্রান্তদের সুচিকিৎসা ও ভাইরাসের প্রকোপ যাতে না বাড়ে সেজন্য সর্তকতা ও প্রতিরোধমূলক যাবতীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে সরকারের ব্যর্থতা জনগণ কখনো ক্ষমা করবে না। কারণ জনগণ ১৯৭৪ সালের মত আরেকবার গণমৃত্যুর শিকার হতে চায় না।”
বিএনপি নেতাদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, শওকত শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।