করোনাভাইরাস: ক্যাম্পাস বন্ধের দাবিতে অনশনে ৫ ঢাবি ছাত্র
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় ক্যাম্পাস বন্ধের দাবিতে অনশনে বসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মোড়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আগের রাতে অনশন শুরু করা চারজনের সঙ্গে রোববা সকালে আরও একজন যোগ দিয়েছেন।
এরা হলেন- হাসান বিশ্বাস (টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি), জোনাইদ হোসেন (মনোবিজ্ঞান), ইয়াসিন আরাফাত প্লাবন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), আরাফাতুল ওসমানী (আইন) ও রকিব রানা মাসুম (অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ)। সবাই তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
অনশনরত হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনো কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে শুরু করে ক্লাসরুম সর্বত্র গাদাগাদি করে চলতে হয়।
“বাংলাদেশে ইতিমধ্যে কয়েকজন আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্রমণ হওয়ার আগেই ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া উচিত। যেহেতু বিষয়টি খুব আশঙ্কাজনক ও গুরুতর, তাই আমরা অনশনের মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছি।তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ অনশনরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি তিনি অভিযোগ করেন।
আরেক অনশনকারী জুনাইদ বলেন, “চারজনের রুমে আমরা ৩০-৪০ জন থাকি, ক্লাসরুমেও তাই। করোনা এমন একটি ভাইরাস তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। একজন আক্রান্ত হলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাজার ছাড়িয়ে যাবে। তাই আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হোক।”
বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাস বন্ধের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন থেকে ‘করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার’ দাবি জানিয়েছেন আরেক দল শিক্ষার্থী।
এসময় এদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রোবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, ৩৩টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে।
এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি অনশনের কোনো বিষয় না। এটা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়, পরিস্থিতি বুঝে রাষ্ট্র এটার সিদ্ধান্ত নেবে
“ছেলেদের উদ্দেশ্য তো আর খারাপ না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, দেশের জন্য ও বৃহত্তর স্বার্থের জন্য যা উপকারী হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের। আমরা সবকিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।”গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম তিনজনের নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।তাদের মধ্যে দুজন সুস্থ্য হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে হয়েছে।
এর মধ্যেই ইতালি ও জার্মানিফেরত প্রবাসী দুজন বাংলাদেশির নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার কথা রোববার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।