করোনাভাইরাসে জাপানে প্রথম মৃত্যু
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নভেল করোনাভাইরাসে রেকর্ড মৃত্যুর পরদিনই পরিস্থিতির উন্নতি দেখা গেল চীনের হুবেই প্রদেশে; সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এলেও কভিড-১৯ রোগে প্রথম মৃত্যুর খবর মিলেছে জাপান থেকে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর গত বুধবার ভয়ঙ্কর দিন এসেছিল চীনের হুবেইয়ে; একদিনে ২৪২ জনের মৃত্যু এবং প্রায় ১৫ হাজার নতুন রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে। চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোগ নির্ণয় পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার পর এত মৃত্যুর পরদিনই উল্টো চিত্র দেখা গেল।
বৃহস্পতিবার ১১৬ জনের মৃত্যুর কথা হুবেইয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে শুক্রবার জানিয়েছে বিবিসি ও রয়টার্স। আর নতুন আক্রান্তের সংখ্যাও আগের দিনের ১৪ হাজার ৮৪০ থেকে নেমে এসেছে ৪ হাজার ৮২৩ জনে।
হুবেইয়ের রাজধানী উহান শহর থেকে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এনিয়ে এপর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৮০ জনে। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯০ জন বেড়ে ৫৫ হাজার ৭৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
চীনের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার পর আরও ২৪টি দেশে সংক্রমণ ঘটেছে করোনাভাইরাসের। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৭ জন এবং মৃত্যু ঘটেছে দুজনের। করোনাভাইরাসে চীনের বাইরে ফিলিপিন্সে একজনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার জাপান সেদেশে একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
কভিড-১৯ এ মারা যাওয়া অশীতিপর ওই জাপানি নারী থাকতেন টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমের কানাগাওয়া এলাকায়। মৃত্যুর পর তার নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হন কর্মকর্তারা।
চীনের হুবেই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও তাতে এখনই আশাবাদী হওয়ার কারণ দেখছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান মাইক রায়ান বিবিসিকে বলেন, চীনে রোগ পরীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার ফলে এক দিনে বড় পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল। এটা এই ইঙ্গিত দেয় না যে পরিস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে, বলেন রায়ান।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষ হয়ে আসছে- এমন কথা বলার সময় এখনও আসেনি। এখনও পরিস্থিতি যে কোনো দিকে যেতে পারে। বিভিন্ন দেশে মানুষ থেকে মানুষে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকায় গত ৩০ জানুয়ারি এ ভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক উপসর্গ হয় ফ্লু বা নিউমোনিয়ার মত। কিন্তু বয়স্ক এবং অন্য অসুস্থতা থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ সংক্রামক রোগ হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। এর কোনো প্রতিষেধকও মানুষের জানা নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়, সাধারণভাবে সেগুলো সারানোর জন্যই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অবস্থা গুরুতর হলে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা।
এ করোনাভাইরাসকে এতদিন নভেল বা নতুন করোনাভাইরাস বা সংক্ষেপে ২০১৯-এনসিওভি বলা হচ্ছিল। এ ভাইরাস যে রোগ সৃষ্টি করছে তার নতুন নাম দেওয়া হয়েছে কভিড-১৯ (করোনাভাইরাস ডিজিজ)।