করোনাভাইরাসের কারণে এখনই স্কুল-কলেজ বন্ধের প্রয়োজন নেই: আইইডিসিআর
বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের রোগী ধরা পড়লেও এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষপাতি নয় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর দিচ্ছেন আইইডিসিআরের গবেষকরা।
তিন মাস আগে চীনে সংক্রমণ ঘটার পর বিশ্বের প্রায় একশ দেশের লাখো মানুষ আক্রান্ত এবং তিন হাজারের বেশি মৃত্যুর পর রোববার বাংলাদেশে তিনজনের দেহে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত করে আইইডিসিআর।
এই কভিড-১৯ রোগীদের দুজনই সম্প্রতি ইতালি থেকে এসেছেন, তাদের একজনের মাধ্যমে ছড়িয়েছে তার স্বজনের মধ্যে।
ইতালিতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশেও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি না- জানতে চাইলে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “এই মুহূর্তে স্কুল-কলেজ বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই।”
সংক্রমণ এড়াতে এই মুহূর্তে জনসমাগমে না যাওয়া ছাড়া আর কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন তিনি।
এই ভাইরাস প্রতিরোধে নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পরামর্শ দিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, “সর্দিকাশি প্রতিরোধে যে নিয়ম, সেগুলো মেনে চলতে হবে।
“আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি যেখানে সেখানে কফ-থুতু ফেলবেন না। কারও সঙ্গে করমর্দন, কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকবেন।”
এই মুহূর্তে যারা বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করছে আইইডিসিআর।
>> নভেল করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
>> রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
>> নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হল, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
>> চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণ এড়াতে চাইলে ঘন ঘন হাত ধোয়া ভালো। সেই সঙ্গে নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীও নিরাপদ রাখতে হবে।
দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে ডা. ফ্লোরা বলেন, “আমরা যেভাবে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি, তাতে কারোই চিন্তা করার কারণ নেই। আমরা অবশ্যই করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব। সমগ্র দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করি।”
তিনি বলেন, “এই মুহুর্তে রোগী এবং তাদের সংস্পর্শে যারা ছিল তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখেছি। তাদের পুরো কন্টাক্টের তালিকা আমাদের কাছে আছে। আমরা মনে করি না, আলাদা করে কোনো ব্যবস্থা নিতে হবে।”