ইদলিবে আসাদবাহিনীর বিমান হামলায় ৩৪ তুর্কি সেনা নিহত
সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবে বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর বিমান হামলায় তুরস্কের অন্তত ৩৪ সেনা নিহত হয়েছে বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধপরিস্থিতি পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে।
হামলার পাল্টায় তুরস্কও পরে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় স্থল ও বিমান হামলা চালায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাশিয়ার সহযোগিতায় আসাদবাহিনী বিরোধীদের হাত থেকে ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত কয়েক দিন ধরেই হামলার পরিমাণ ও তীব্রতা বাড়িয়ে চলছে। বৃহস্পতিবারের হামলা তারই নজির।
তুরস্কের হাতয় প্রদেশের গভর্নর রাহমি দোগান সিরীয় হামলায় অন্তত ৩৩ তুর্কি সেনা নিহতের কথা স্বীকার করেছেন।
আহতের সংখ্যা অগণিত, চিকিৎসার জন্য তাদেরকে তুরস্কের ভেতর নিয়ে আসা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান তুরস্কের শীর্ষ পর্যায়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করার পরপরই ইদলিবে আসাদবাহিনীর বিমান হামলার খবর পাওয়া যায়।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হুলুসি আকার ও ঊর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডাররা পরে সিরিয়ার সীমান্ত থেকে আসাদবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় স্থল ও বিমান হামলার নির্দেশনা দেন।
সিরীয় বাহিনী হামলা চালালে তার প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে বলে এরদোয়ান আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তুরস্কের এ প্রেসিডেন্টের চাওয়া ছিল, আসাদবাহিনী ইদলিবে অভিযান চালালেও তারা যেন আঙ্কারার পর্যবেক্ষণ পোস্টগুলো থেকে দূরে থাকে।
সিরিয়ার সরকার ও রাশিয়া এ দাবি প্রত্যাখান করে সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের এ পাল্টাপাল্টি হামলার পর নেটোর মহাপরিচালক জেনারেল জেনস স্টল্টেনবার্গ তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে কথা বলেছেন।
তুরস্কের অবস্থানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রও সমর্থন জানিয়েছে।
“আমরা আমাদের নেটো মিত্র তুরস্কের পক্ষে আছে। আসাদবাহিনী, রাশিয়া ও ইরানসমর্থিত বাহিনীগুলোর নিন্দনীয় আগ্রাসন বন্ধেরও আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। সংকটকালে তুরস্ককে কী ধরনের সহযোগিতা দেয়া যায়, তা খতিয়ে দেখছি আমরা,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইদলিব পরিস্থিতিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়ে সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন।
বেলজিয়াম ও জার্মানি এক বিবৃতিতে সিরিয়ায় বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে পশ্চিমাদের এসব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আহ্বান উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়া বলছে, সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করাই এখন সিরিয়ার সংকট নিরসনের একমাত্র পথ।
বৃহস্পতিবারের পাল্টাপাল্টি হামলা নিয়ে মস্কো ও আসাদবাহিনীর তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।