আজ থেকে আবারও আমরণ অনশনে খুলনা অঞ্চলের পাটকলের শ্রমিকরা
জয়নাল ফরাজী
১১ দফা দাবিতে আজ রবিবার থেকে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে খুলনা-যশোর অঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিক নেতারা। আজ দুপুর ২টা থেকে এ আমরণ অনশন শুরু হবে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে খুলনা-যশোরের ৯টি পাটকলের গেট সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসময় বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত¡ পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মুরাদ হোসেন, সোহরাব হোসেন, শাহানা সারমিন ও হুমায়ুন কবির গেট সভায় বক্তৃতা করেন।
সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহŸায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ১১ দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। খুলনায় ১০ ডিসেম্বর থেকে অনশনে প্লাটিনাম জুট মিলের একজন শ্রমিক মারা যায়। পরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আরেকজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও দাবি পূরণে সরকার কোন উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে শ্রমিকরা আবারও রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে কর্মরত ৩০ হাজার শ্রমিককের ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে বকেয়া পাওনা ৪০-৪৫ কোটি টাকা। এছাড়া কয়েকদফা মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েও তা’ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ন্যায্য মজুরি-বেতন না পেয়ে শ্রমিক-কর্মচারিরা মানবেতন জীবনযাপন করছেন।
পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরী- বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরী ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকুরীচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পূর্নবহালসহ ১১ দফা দাবিতে গেল ১০ ডিসেম্বর থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা।
অনশনের ৪র্থ দিন ১৩ ডিসেম্বর রাতে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্র“তিতে আমরণ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করে আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর বিজেএমসিতে ও ২৬ ডিসেম্বর শ্রম মন্ত্রণালয়ে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রীসহ পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে শ্রমিক নেতারা জানান, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের ব্যাপারে শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরও এক মাস সময় চেয়েছেন। কিন্তু ওই এক মাস পর আসলেই মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হবে কী না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউই। শুধু শুধু সময়ক্ষেপণ করার জন্য এক মাসের কথা বলা হচ্ছে। তাদের দাবির ব্যাপারে কোন সমাধান না হওয়ায় আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচির ডাক দেয় সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।