অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প: আইনজীবী
২০১৬ সালে উইকিলিকসের ফাঁস করা ডেমোক্রেটিক পার্টির ইমেইলের বিষয়ে রাশিয়ার কোনো ভূমিকা ছিল না, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এমন বিবৃতি দিলে তাকে ক্ষমা করা হবে; যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন এক আইনজীবী।
বুধবার লন্ডনের একটি আদালতে অ্যাসাঞ্জের মামলার শুনানিকালে তার পক্ষের আইনজীবী এ দাবি করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না, আগামী সপ্তাহে তা নিয়ে শুনানি শুরু হওয়ার কথা। ওই শুনানি পরিচালনা নিয়ে আইনজীবীরা আলোচনা করার সময় কারাগার থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতে হাজির হন অ্যাসাঞ্জ।
লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার হাকিম আদালতে অ্যাসাঞ্জের ব্যারিস্টার এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ড বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রতিনিধি ডানা রোরাবাকার ২০১৭ সালে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমা প্রস্তাব দিয়ে তাকে অ্যাসাঞ্জের কাছে পাঠিয়েছিলেন।
২০১৬ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে সব ইমেইল ফাঁস হওয়া কারণে তার সঙ্গে রাশিয়া জড়িত ছিল না, অ্যাসাঞ্জ এমনটি বললে তাকে ক্ষমা করা হবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছিল; প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেওয়া বিবৃতিতে রোরাবাকার এমনটি বলেছিলেন বলে আদালতকে জানান ফিটজেরাল্ড।
কিন্তু ফিটজেরাল্ডের এ দাবি অস্বীকার করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিশাম।
“ডানা রোরাবাকারকে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) শুধু সাবেক কংগ্রেসম্যান হিসেবেই চেনেন, এর বাইরে তাদের মধ্যে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি তার (রোরাবাকার) সঙ্গে এ বিষয় কেন প্রায় কোনো বিষয়েই কখনো কথা বলেননি। পুরোটাই বানানো মিথ্যা কথা,” বলেছেন গ্রিশাম।
ফিটজেরান্ডের দাবি প্রতিক্রিয়ায় রোরাবাকারও প্রায় একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন; তিনি জানান, তিনি কখনোই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
অ্যাসাঞ্জের কাছে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তাকে পাঠানো হয়েছিল, এ কথাও অস্বীকার করেছেন সাবেক এ কংগ্রেসম্যান।
এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ইমেইলগুলো কীভাবে পেয়েছেন অ্যাসাঞ্জ তা প্রকাশ করলে তাকে ক্ষমা করার জন্য ট্রাম্পের কাছে সুপারিশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি এবং যা করেছেন নিজ দায়িত্বেই করেছেন।
তিনি আরও জানান, ওই সময় ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ জন কেলির কাছে অ্যাসাঞ্জ সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পরে হোয়াই হাউস থেকে কোনো সাড়া পাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য রাশিয়া নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল আর তার অংশ হিসেবে হিলারির জন্য বিব্রতকর ইমেইল হ্যাক করে সেগুলো প্রকাশ করে দিয়েছিল; তদন্তের পর এমন সিদ্ধান্তে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
কিন্তু রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ওই নির্বাচনে হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মস্কোর সঙ্গে কোনো নির্বাচনী আঁতাঁত করার কথা অস্বীকার করেছেন।
এপ্রিলে লন্ডন পুলিশ জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়ার আগে বর্তমানে ৪৮ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ সাত বছর লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে কাটিয়েছেন। তাকে সরকারি কম্পিউটার হ্যাক ও গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনসহ ১৮টি অভিযোগের মুখোমুখি করে বিচার করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দোষী সাব্যস্ত হলে দশকের পর দশক তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে।