অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে বিশ্বরেকর্ড আলিসের
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রথমবার ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে বিপিএল খেলতে নেমেই ইতিহাস গড়লেন তরুণ স্পিনার আলিস আল ইসলাম। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তুলে নিলেন অবিশ্বাস্য এক হ্যাটট্রিক। বিপিএলে চলতি আসরে এটি প্রথম হ্যাটট্রিক! শুধু তাই তান, টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেই অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করা প্রথম (সম্ভাব্য) বোলার তিনি। অথচ এই ম্যাচের আগে তাকে কেউ সেভাবে চিনতোই না।
বয়স মাত্র ২২ বছর ৩০ দিন। বিপিএলের মতো বড় আসরে প্রথম মাঠে নামা। সবমিলিয়ে অভিষেক ম্যাচের আবেগ মাথায় নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন ডানহাতি স্পিনার এলিস আল ইসলাম। কিন্তু এমন উত্তেজনার ম্যাচেই ইতিহাসে নিজের নাম লিখিয়ে ফেললেন অখ্যাত এই বোলার। যাকে বলে সোজা ‘জিরো থেকে হিরো’।
১৮তম ওভারে তাকে বোলিংয়ে আনেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব। রংপুর তখন জয় থেকে মাত্র ২৬ রান দূরত্বে। বাকি ১৮ বল। ওভারের শেষ তিন বলেই উইকেট তুলে নিয়ে দলের জয় যেমন সহজ করে দিলেন আবার নিজেও হয়ে গেলেন ইতিহাসের অংশ।
মোহাম্মদ মিঠুনকে ফিরিয়ে শুরু। এরপর মাশরাফি ও ফরহাদ রেজাকেও ফেরান এই অফস্পিনার। এই ধ্বসের পর আর কোনোভাবেই ম্যাচে ফিরতে পারেনি রংপুর। শেষে ২ রানের জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা।
ফিফটির পথে এগুতে থাকা মিঠুন ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। আগের বলেই বেনি হওয়েলের ফিরতি ক্যাচ মিস করেছেন। অভিষিক্ত বোলারের জন্য বেশ নার্ভাস পরিস্থিতি। কিন্তু চতুর্থ বলে স্লগে পরাস্ত করে মিঠুনকে বোল্ড করে দেন আল ইসলাম। ৩৫ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রান করে বিদায় নেন মিঠুন।
এরপরের বলেই রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফিকেও (০) বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান। তুমুল উত্তেজনার মুহূর্ত তথা হ্যাটট্রিক বলে ক্রিজে ছিলেন ফরহাদ রেজা। এবার লেন্থ বলে পরাস্ত করে ফরহাদকে সাকিবের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে হ্যাটট্রিকের উলাসে মাতেন আল ইসলাম।
এর আগে বিপিএলে হ্যাটট্রিক পেয়েছিলেন আরও দুই বোলার। ২০১১-১২ মৌসুমে ঢাকা গ্ল্যাডিয়টর্সের বিপক্ষে পাকিস্তানী ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ শামি ও ২০১৫-১৬ মৌসুমে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন আল-আমিন হোসেন।
শুধু হ্যাটট্রিক নয়, ম্যাচের শেষ ওভারে বোলিংয়ে আনা হয় আলিসকে। রংপুরের প্রয়োজন তখন ১৪ রান। ওই ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভালো শুরু করেন শফিউল ইসলাম। কিন্তু শেষ ৪ বলে মাত্র ৩ রান খরচ করে দলকে ২ রানের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন ‘হ্যাটট্রিক বয়’ আলিস।
এর আগে ম্যাচের ও এখন পর্যন্ত চলতি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার রাইলি রুশোর উইকেটটিও তুলে নিয়েছিলেন আল ইসলাম। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ২৬ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরাও নির্বাচিত হয়েছেন এই ‘অখ্যাত থেকে বিখ্যাত’ বনে যাওয়া তরুণ স্পিনার।