April 26, 2024
ফিচারলাইফস্টাইল

শীতে ঘুরি বাংলাদেশে !

বাংলাদেশে শীত কালে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাওয়া উচিত ?
ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশে বর্ষার পরপরি শীত নেমে আসে আস্তে আস্তে করে। ডিসেম্বর এর শুরুর দিক থেকে পড়তে থাকে হালকা কুয়াশা। আর ভ্রমণ পিপাসু দের অনেকের জন্যই শীত কাল ঘুরাঘুরির জন্য একদম পারফেক্ট । আর তাই অনেকেই বছরের শেষ ডিসেম্বর মাসে শীতকালীন ছুটি তে বেরিয়ে পড়েন দেশের দর্শনীয় স্থান গুলোতে ঘুরতে। কেউ বা পরিবার সহ কেউ বা বন্ধু-বান্ধবের দল-বল সহ। কিন্তু তার আগে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না যে, এই শীতে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় বা ঘুরতে যাওয়া উচিত। বা কোন জায়গা গুলো শীতে ঘুরার জন্য একদম পারফেক্ট। আজ আপনাদের কে জানাবো সেরকম কিছু জায়গার কথা যেখানে আপনি শীত কালেই ঘুরে বেশী মজা পাবেন ।
১. কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত কিংবা সেন্ট মারটিন দ্বীপ –
কক্সবাজার নিয়ে আসলে নতুন করে কিছু বলার নেই। আপনি হয়তো ৫-৬ বার কক্সবাজার গিয়েছেন তারপরেও কক্সবাজার এমন একটি জায়াগা যেখানে আপনার এর পরের বার যেতেও বিরক্ত লাগবে না । শীতকালেই হচ্ছে কক্সবাজার বেড়ানোর জন্য আদর্শ সময়। হালকা শীতের মাঝে সমুদ্রের গর্জন নিশ্চই আপনাকে শীহরিত করবে। তাই দেরি না করে এই শীতে ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা এই সমুদ্রসৈকত এ। আর কক্সবাজার গেলে এবার নাহয় সাথে সেন্ট মারটিন দ্বীপ ও ঘুরে আসুন। আরো বেশ কিছু অভিজ্ঞতা জমা হবে আপনার ট্রাভেলিং ভান্ডারে।
২.কেওক্রাডং এর চূড়া –
বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় জেলা বান্দরবানে অবস্থিত। এক সময় এটিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ধরা হত। এর উচ্চতা প্রায় ৯৮৬ মিটার ৩,২৩৫ ফুট। যারা পাহাড়ে হাইকিং পছন্দ করেন কিংবা এডভেঞ্চার প্রেমিক তাদের জন্য কেওক্রাডং এর চূড়া পর্যন্ত হাইকিং হতে পারে জীবনের সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। আপনি হয়তো কেওক্রাডং এর চূড়া পর্যন্ত হাইকিং করতে করতে হাপিয়ে যাবেন কিন্তু চূড়ায় উঠার পর আনমনেই মুখ ফুটে বলে উঠবেন – এখানে না আসলে তো জীবন টা ১৬ আনাই বৃথা ছিলো । আর আপনার যদি ভ্রমণ প্রেমী কিছু বন্ধু থাকে তাহলে কিসের দেরী !! ব্যাগ গুছানো শুরু করে দিতে পারেন বান্দরবানের দিকে । অগ্রীম শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য ।
৩. নিঝুম দ্বীপ –
বঙ্গোপসাগরের কোলে উত্তর ও পশ্চিমে মেঘনার শাখা নদী, আর দক্ষিণ এবং পূর্বে নোয়াখালির হাতিয়ায় সৈকত ও সমুদ্র বালুচরবেষ্টিত ছোট্ট সবুজ ভূখণ্ড নিঝুম দ্বীপ। এখানে শীতকালে বসে হাজার পাখির মেলা, বন্য কুকুর আর সাপের অভয়ারণ্য এই বনের সবুজ ঘাস চিরে সারা দিন দৌড়ে বেড়ায় চিত্রা হরিণের দল। এই হলো সংক্ষেপে নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপ– সত্যিই নিঝুম। সব কিছুর বাহিরে নিজেকে আপনি অন্যরকম এক শান্তির দুনিয়ায় আবিষ্কার করবেন যেখানে আপনাকে জালানোর কেউই নেই। এখানে আপনি খুজে পাবেন না পর্যটনের চাকচিক্য, রং বেরং এর বাতির ঝলক কিংবা যান্ত্রিক কোন বাহনের অসহনীয় শব্দ। নিঝুম– সত্যিই নিঝুম, নিশ্চুপ। আসলেই সার্থক এ দ্বীপের নামকরন নিঝুম দ্বীপ। আর আপনি চাইলে রাতে ক্যাম্পেইন করার জন্য পাবেন সমুদ্রের তীরে বনের পাশে বিশাল সবুজ ঘাসের বিছানা। আর গেলে অবশ্যই তাজা ইলিশ খেতে ভুলবেন না।
৪. সাজেক ভ্যালী –
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায় মেঘের রাজ্যে আপনাকে স্বাগতম। সাজেক রাংগামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। এখানকার আবহাওয়া খুব দ্রুত রুপ পরিবর্তন করে। হয়তো বা একদিনেই আপনি এখানে দেখবেন এই বুঝি গরমে দম হাসফাস করছে আরেকটু পরেই আবার দেখবেন বৃষ্টি তে ভিজে চুপচুপ হয়ে আপনি একাকার। আর তারপরেই অবাক বিস্ময়ে দেখলেন আপনি মেঘের ভেতর ভাসছেন। হ্যা , এটাই সাজেকের আলাদা বৈশিষ্ট্য। আর আশেপাশে পাবেন বেশ কিছু পাহাড়। যেগুলো আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে প্রকৃতির মায়াজালে। কংলাক পাহাড়ের চূড়া থেকে শীতের সকালে কুয়াশার ফাক গলে সূর্যোদয় দেখতে কেমন লাগবে নিজেই একবার ভাবুন ! আর সাজেক পরিবার বন্ধুবান্ধব সবাইকেই নিয়েই ঘুরার মতো একটা জায়গা। বাকি আর কিছু না বললাম, সাজেকের বাকি সৌন্দর্য আপনি উপভোগ করুন সাজেক ভ্যালি গিয়েই। আর এই শীতেই তার মোক্ষম সুযোগ।
৫. সীতাকুণ্ডর পাহাড় আর সমুদ্র –
আপনি যদি এক ডিলে কেবল ২ পাখি না সব পাখিই মারতে চান তাহলে আপনার এই শীতে ঘুরতে যাওয়া উচিত সীতাকুণ্ড তে। কারণ বলছি, সীতাকুন্ড এমন একটি জায়গা যেখানে একি এলাকার আশে পাশেই সমুদ্র, সী-বিচ, ঝর্না, পাহাড়, ইকো পার্ক, বনাঞ্চল সব কিছুই ঘুরে দেখতে পারেন। চন্দ্রনাথ পাহাড়, গুলিয়াখালি সী-বিচ,বাশ বাড়িয়া সমুদ্র, সৈকত সীতাকুন্ড ইকো পার্ক, নাপিত্যাছড়া ঝর্না, খইয়াছড়া ঝর্না এরকম আরো অনেক অনিন্দ্য সুন্দর জায়গা। অল্প খরচের মাঝেই ঘুরে আসতে পারবেন এসব জায়গা আরামে। কথা দিচ্ছি হতাশ করবে না আপনাকে সীতাকুন্ড ভ্রমন। সকালে পাহড়ের চূড়ায় মেঘের কোলে দোল খেলেন আর বিকালে সমুদ্র তটে পা ভিজালেন আর সূর্যাস্ত দেখলেন। কি, কেমন লাগছে ভাবতে ব্যাপারটা ? আর বাকি টা অনুভব করার জন্য আপনাকে অগ্রিম দাওয়াত দিয়ে রাখলাম সীতাকুন্ডের দিকে ।
(সংগৃহীত) 
শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *