ওয়ার্কার্স পার্টি কারও ছায়ায় থাকবে না: বাদশা
নীতির প্রশ্নে একদলের বর্জনের মধ্যে শুরু হল রাশেদ খান মেনন নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টির দশম কংগ্রেস।
শনিবার সকালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই কংগ্রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, কারও ‘ছায়ার নিচে থেকে’ তার দল রাজনীতি করবে না।
জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস উদ্বোধন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক বাদশা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী এই বাম দলের কংগ্রেসে পরবর্তী নীতি-কৌশল যেমন ঠিক হবে, তেমনি নতুন নেতৃত্বও গঠিত হবে।
এই কংগ্রেসের আগেই দলটিতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। দল ছেড়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস। আদর্শচ্যুতির অভিযোগ তুলে কংগ্রেস বর্জন করে আলাদা দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন আরও ছয়জন কেন্দ্রীয় নেতা।
এই পরিস্থিতির মধ্যে কংগ্রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বাদশা বলেন, “আমরা কারও ঘাড়ে হাত রেখে রাজনীতি করব না। কারও ছায়াতলে আমরা রাজনীতি করব না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজস্ব সংগ্রাম ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে রাজনীতি করব।”আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল যে ২৩ দফা দাবির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল, তা কতটা সফল হয়েছে তা পর্যালোচনার সময় এসে গেছে বলেও মন্তব্য করেন বাদশা।
তিনি বলেন, “দুঃশাসনে মানুষের অনাস্থায় সাম্প্রদায়িক শক্তি অজগরের মতো বিকশিত হয়েছে। দক্ষিণপন্থি শক্তি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠছে। আজকে আরব বিশ্ব বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নিতে নানা ষড়যন্ত্র করেছে। নিজেদের সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ দিচ্ছে।”
কংগ্রেসে ২১ দফা দাবি উত্থাপন করা হবে বলে জানান বাদশা।
এই সংসদ সদস্য বলেন, “সুশাসনের অভাবে লুটেরাদের হাতে জনগণ জিম্মি হয়ে গেছে। অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে, দুর্নীতি বেড়েছে।
“এ ২১ দফা হবে বৈষম্যহীন, জনগণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আদর্শের লড়াই। বিকল্প শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।”
যারা ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে গেছেন তারা ‘আত্মপ্রবঞ্চনার রাজনীতি করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন বাদশা।
তিনি বলেন, “তারা সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষায় নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।”
সমালোচনায় থাকা মেনন বলেন, “আমাকে আজকে আর সততার পরীক্ষা দিতে হবে না, এর প্রয়োজন নেই। আমি সৎ ছিলাম, সৎ আছি।”
এবারের কংগ্রেসে ৫৮টি জেলা থেকে সাড়ে ৭০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন বলে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা জানান।
২০০৮ সালের ৭ অগাস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নবম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল।