৯৮ বছরেও করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন চিকিৎসক
বয়স একশ’ ছুঁইছুঁই। তবু করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশের দুর্দশায় স্থির থাকতে পারেননি। লাঠিতে ভর দিয়েই তিনি করে চলেছেন মানুষের সেবা।
ফ্রান্সের সবচেয়ে প্রবীণ চিকিৎসক তিনি। কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে লকডাউনের মধ্যেও সপ্তাহে সপ্তাহে তিনি অবসরপ্রাপ্তদের আশ্রমে যাচ্ছেন নিয়মিত।
লড়াকু এই মানুষটির নাম ক্রিশ্চিওঁ শেনি। থাকেন রাজধানী প্যারিসের এক শহরতলীতে। সেখানে স্থানীয় পারিবারিক চিকিৎসক পর্যাপ্ত নেই। ১৯ হাজার মানুষের জন্য আছে মাত্র তিন চিকিৎসক। তাই ৯৮ বছর বয়সে এসেও কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এটি একটি কারণ।
শেনি বলেন, “প্রত্যেকেই এখন সত্যিই ভয়ে আছে। আমিও খুব সাবধানে আছি। আমি বাসায় কোভিড-১৯ নিয়ে আসি কিনা তা নিয়ে আমার স্ত্রী খুবই শঙ্কিত।সেটা স্বাভাবিক।” কিন্তু তার কথায়, করোনাভাইরাসের এ সঙ্কটে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে থাকা যায় না।
করোনাভাইরাস মহামারীতে বৃদ্ধনিবাসগুলোই ভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। তাই এ সঙ্কটের দিনে তাদের পাশে থাকা দরকার মনে করেই শেনি এ জায়গাগুলোতে যাচ্ছেন। তবে তিনি জানান, সেখানকার কেয়ার হোমগুলোতে এখনো কোনো কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া যায়নি, এটি শুভ লক্ষণ।
বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে কেউ আক্রান্ত হলে বিপর্যয় ঘটবে বলেই শেনি মনে করেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই না ৬০ রোগীর মধ্যে ২০ জনই মারা যাক।”
সরাসরি রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে শেনিরও একসময় কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দেওয়ায় কিছুদিন স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে ছিলেন তিনি। এরপর আবার ফিরে আসেন কাজে। এখন তিনি ফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই রোগীদের চিকিৎসায় পরামর্শ দিচ্ছেন।
কিন্তু বয়স বাড়ছে,এ অবস্থায় অবসরে যাওয়ার কথা ভাবছেন কি-না সে প্রশ্নে শেনি বলেন, “আমার বয়স ৯৯ হতে চলেছে। নানা কারণেই আমাকে কাজ করা কমাতে হবে। আগের মতো আর কাজ করতে পারি না। আমার নিজের দিকেও নজর দিতে হবে।”