৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে ঢাবিতে ফের তালা
সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকালে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, কলাভবন, ব্যবসায় অনুষদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, মোকাররম ভবন, মোতাহার হোসেন ভবনসহ অন্যান্য অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
মোকাররম ভবনের এক কর্মচারী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো তালাগুলোতে সুপার গ্লু লাগিয়ে দিয়েছে। তার সঙ্গে নতুন করে আরো তালা লাগিয়েছে। আমরা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তালা ভাঙতেও পারছি না।”
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাকিল মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রশাসন থেকে গতকাল বলা হয়েছে সাত কলেজকে আলাদাভাবে পরিচালনা করা হবে। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করা। আমরা মনে করি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। এর ফলে এসব কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পরিচালিত হচ্ছে।
কলেজগুলো হল- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
প্রতি মাসে প্রত্যেকটি বিভাগে প্রতি কলেজে দুইদিন করে মোট ১৪ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়াসহ মোট পাঁচটি দাবি আদায়ে গত এপ্রিলে আন্দোলনে নামে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
কিছু ‘জটিলতার’ কারণে ওই সাত সরকারি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে ‘অসুবিধা’ সৃষ্টি হওয়ার কথা স্বীকার করে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দ্রুততম সময়ে পাঁচ দাবি পূরণে আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করে অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।কিন্তু ওই সাত কলেজের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ধীর গতি দেখা দিয়েছে অভিযোগ তুলে এরপর আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
এর অংশ হিসেবে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে তারা কয়েক ঘণ্টা করে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের অবরোধের কারণে ওই মোড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
এরপর রোববার সকালে আন্দোনকারীরা কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। ফলে ক্লাস পরীক্ষা-বন্ধ হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে বিকালে অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ডাকসু নেতাদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে বৈঠক করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহম্মদ সামাদ।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পাল্টাপাল্টি আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজের ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়াগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো পূরণ করতে বিশ্ববিদ্যাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করবে।