৭ই মার্চকে জাতীয় ‘ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত খুবি শিক্ষার্থীরা
রেজওয়ান আহম্মেদ, খুবি প্রতিনিধি
গত ১৩ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে ৭ই মার্চ তারিখকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা করা হয় এবং দিবসটি উদযাপনের জন্য মন্ত্রীপরিষ বিভাগ কতৃক জারিকৃত পরিপত্রের “ক” ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ জুলাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। বার্তায় উপাচার্য বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, ঐতিহাসিক দলিল। এ দিনটি জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে অনুমোদন পাওয়ায় ৭ মার্চের গুরুত্ব আরও বাড়লো এবং এ সর্ম্পকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম আরও জানার সুযোগ পাবে। এ ভাষণ কাল থেকে কালান্তরে নতুন প্রজন্মের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। সরকারের এ অনন্যধর্মী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অন্যান্য মহলের সাথে আনন্দে ভাসছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরাও। তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং এ ঘোষণাকে মুজিববর্ষের শ্রেষ্ঠ উপহার উল্লেখ করেও মতামত দেন।
চলুন দেখে আসি শিক্ষার্থীদের ভাবনাঃ
ফারহানা লিয়া, আইন ডিসিপ্লিন: মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ৭ই মার্চের ভাষণ। ঐতিহাসিক এ ভাষণ শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয়ও বহন করে। বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্খিত মুক্তির লক্ষ্যে। বাঙালির জাতীয় জীবনে ৭ই মার্চের রয়েছে অপরিহার্য অবদান। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে ৭ই মার্চের ভাষণকে নানাভাবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার মাধ্যমে যা পূর্ণতা পেল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
শাকিল আহমেদ, ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিন: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালী জাতিকে পরাধীনতার শেকল হতে মুক্ত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। সেই মূলমন্ত্র বাঙালী জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল যুদ্ধে অংশগ্রহণে। সম্প্রতি এই দিনকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে ফলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে ৭ই মার্চের তাৎপর্য জানাতে অগ্রনী ভূমিকা রাখবে।
একরামুল হক, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন: বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল মূলত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এ ভাষণই বাঙালিদের নয়মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার প্রেরণা জুগিয়েছিলো। তাই এ ঘোষণার মাধ্যমে আমরা এবং পরবর্তী প্রজন্ম এ দিনটির তাৎপর্য আরো জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমি মনে করি। সাথে সাথে মুজিববর্ষে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সুমাইয়া আক্তার, ইংরেজি ডিসিপ্লিন: এ দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তেজোদ্দীপ্ত বজ্রকন্ঠের নির্ঘোষে জাতি হয়ে উঠেছিলো একনিষ্ঠ সৈনিক। গণতন্ত্র, আত্মনিয়ন্ত্রণ আর স্বাধীকার চেতনার ভাষণটি জাতির প্রত্যাশার আয়নায় পরিণত হয়েছিলো। এটি বাংলার আত্মপরিচয় পাওয়ার দলিল।তাই এ মহান বাণীর তাৎপর্য পরবর্তী প্রজন্মকে জানানো এখন সময়ের দাবি। এ দিনটকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করায় জাতির একটি দীর্ঘ প্রত্যাশা ও স্বপ্ন পুরণ হলো। এছাড়াও বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ মহতী উদ্যোগের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ