২০ দিন পর জনসম্মুখে কিম
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন ২০ দিন পর জনসম্মুখে এসে একটি সার কারখানার প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) পরে কিমের ফিতা কাটার ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসে থাকার ছবিও প্রকাশ করেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
শুক্রবার কিমকে জনসম্মুখে দেখে লোকজন ‘গগনবিদারী হুররে উল্লাসধ্বনিতে ফেটে পড়ে’ বলেছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।
পিয়ংইয়ংয়ের উত্তরে অবস্থিত ওই কারখানাতে কিমের সঙ্গে তার বোন কিম ইয়ো জংসহ দেশটির সরকারের বেশ ক’জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ছিলেন।
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা তার বক্তৃতায় কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ জানান এবং দেশের রাসায়নিক শিল্প ও খাদ্য উৎপাদনে সার কারখানাটির অবদানের প্রশংসা করেন, বলেছে কেসিএনএ।
উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যমের এ প্রতিবেদন ও ছবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
দেশটির কঠোর গোপনীয় শাসনব্যবস্থার কারণে সেখানকার সংবাদ সংগ্রহ বেশ কষ্টসাধ্য, বলেছে তারা।
দাদা কিম ইল সুংয়ের জন্মবার্ষিকী ও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে কিমের অনুপস্থিতির পর থেকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল।
শুক্রবারের আগে উত্তর কোরীয় গণমাধ্যমগুলোতেও ১২ এপ্রিলের পর কিমের জনসম্মুখে আসার আর কোনো খবর ছিল না।
পক্ষত্যাগী উত্তর কোরীয়দের একটি ওয়েবসাইটে হৃদপিণ্ডের অপারেশনের পর কিম অসুস্থ থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হলে, ওই ওয়েবসাইটের সূত্রেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ‘কিম গুরুতর অসুস্থ’, ‘অচেতন হয়ে আছেন’ বলে খবর প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে গভীর নজর রাখা হচ্ছে, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের এমন মন্তব্য গণমাধ্যমের জল্পনাকে আরও উসকে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনের তথ্যে ‘অনাস্থা’ জানালেও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে কিমের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের কর্মকর্তারা অবশ্য শুরু থেকেই উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে আসছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক মন্ত্রী গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের এক শুনানিতে বলেন, করোনাভাইরাসজনিত উদ্বেগ থেকেই কিম লোকচক্ষুর আড়ালে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে কিমের উপস্থিতির খবর নিয়ে শুক্রবার ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিবিসি বলছে, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরেও একটি কনসার্টে উপস্থিত থাকার পর টানা ৪০ দিন কিম জনসম্মুখে আসেননি। এ সময় তিনি কী করেছেন, কোথায় ছিলেন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তার কোনো খবরও ছিল না।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সেসময় বাম পায়ের গোড়ালিতে অপারেশনের কারণেই কিম অনুপস্থিত বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল।