November 25, 2024
খেলাধুলা

২০০৫ অ্যাশেজের জোয়ার ফিরবে ইংলিশ ক্রিকেটে?

 

ক্রীড়া ডেস্ক

২৭ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ড। সেটিও দেশের মাটিতে। ২০০৫ অ্যাশেজ জয়ের পাশাপাশি এবারের ফাইনাল সম্ভবত গত ৩০ বছরে ইংলিশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ঘটনা। তবে আরেকটি দিক থেকেও এই ফাইনাল হতে যাচ্ছে মাইলফলক। ১৪ বছর পর দেশটিতে ক্রিকেট দেখা যাবে ‘ফ্রি টু এয়ার’ চ্যানেলে! ধারণা করা হচ্ছে, আবার ক্রিকেটের জোয়ার ফিরতে পারে ইংল্যান্ডে।

ক্রিকেটের জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও এখানে ক্রিকেট কখনোই তুমুল জনপ্রিয় ছিল না। ফুটবল, রাগবির জনপ্রিয়তার সঙ্গে তো তুলনাই হয় না। তবে ২০০৫ অ্যাশেজের সময়টায় গোটা ইংল্যান্ড বুঁদ ছিল ক্রিকেটেই।

সেই অ্যাশেজ জয়ের পর প্রায় গোটা দেশ রূপ নিয়েছিল উৎসবের জনপদে। ক্রিকেটাররা হয়ে উঠেছিলেন মহাতারকা। তারা বাইরে বের হলেই লোক জড়ো হয়ে যেত। অ্যাশেজ জয়ী অধিনায়ক মাইকেল ভন, জয়ের অন্যতম নায়ক অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফের বাড়ির বাইরে লোকের ভিড় লেগেই থাকত। তাদের পেছনে স্পন্সরদের ছুটোছুটিও লেগে ছিল।

দেড় যুগ পর ইংল্যান্ড সেবার অ্যাশেজ জিতেছিল, এটি তো একটি কারণ ছিলই। তার চেয়েও বড় কারণ ছিল, ওই অ্যাশেজ দেখিয়েছিল চ্যানেল ফোর, যারা ছিল টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল। সিরিজটিও ছিল তুমুল প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ এবং ক্রিকেটীয় মানে দুর্দান্ত। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল ক্রিকেট।

সেই সাফল্যে যখন ক্রিকেট হয়ে ওঠার কথা সার্বজনীন, উল্টো সেই অ্যাশেজের পর বন্ধ হয়ে যায় ক্রিকেটের জন্য সাধারণ্যের দুয়ার। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) স¤প্রচার স্বত্ব পায় স্কাই স্পোর্টস, যারা ‘পে চ্যানেল’। মোটা অঙ্কের অর্থে ফুলেফেঁপে ওঠে বোর্ডের কোষাগার। কিন্তু ক্রিকেটের বিস্তার থমকে যায়।

ক্রমেই তাই সংকুচিত হয়ে আসতে থাকে ইংল্যান্ডে ক্রিকেটের পরিধি। এখনও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন পাব, বার বা রেস্টুরেন্টে স্কাই স্পোর্টস থাকলে বড় করে ব্যানার থাকে, ‘এখানে স্কাই স্পোর্টস দেখা যায়’। স্কাই থাকা এখানে বড় বিজ্ঞাপন, এই চ্যানেল এখানে এতটাই বড় ব্যাপার।

২০০৫ অ্যাশেজের পর ২০০৯ অ্যাশেজে দেশের মাটিতে জিতেছে ইংল্যান্ড। ২০১০-১১ অ্যাশেজ জিতেছে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে। আবার দেশের মাটিতে জিতেছে ২০১৩ ও ২০১৫ অ্যাশেজ। কিন্তু ক্রিকেটের জোয়ার আসা বহুদূর, জনপ্রিয়তার স্রোত খুব বেগবানও দেখা যায়নি। মূল কারণ মনে করা হয়, পে চ্যানেলে ক্রিকেট স¤প্রচার।

বিবিসির একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ২০০৫ অ্যাশেজের সময় চ্যানেল ফোরের একদিনে সর্বোচ্চ দর্শক ছিল ৮২ লাখ, চতুর্থ টেস্ট জিতে যেদিন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। অথচ ২০০৯ অ্যাশেজে স্কাই স্পোর্টসের একদিনের সর্বোচ্চ দর্শক ছিল কেবল ১৯ লাখ, ২০১৩ অ্যাশেজে ১৩ লাখ।

২০০৯ থেকে এই ১০ বছরে ছয় অ্যাশেজের চারটিই জিতেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু বিবিসির ‘স্পোর্টস পারসোনালিটি অব দা ইয়ার’ পুরষ্কারে দর্শক ভোটে সেরা তিনে আসতে পারেনি কোনো ক্রিকেটার। সবশেষ সেই ২০০৫ অ্যাশেজ জয়ের পর সেরা তিনে ছিলে ফ্লিনটফ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *