১ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
দেশের কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন সারসহ ৫ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটি ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২৭তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩৫তম সভা হয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ৫টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৩টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ৫টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩০৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৩২৭ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ ৯৭৭ কোটি ১২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮ টাকা।
সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে ৮ম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ৭৭৮.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪১৪ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ টাকা।
জানা গেছে, বিভিন্ন কাস্টম হাউস ও দপ্তরের জন্য ৬টি কন্টেইনার স্ক্যানার সিস্টেম ক্রয়ে একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বাণিজ্যসকরণ এবং পণ্য খালাস দ্রুততার পাশাপাশি চোরাচালান ও শুল্ক-কর ফাঁকি রোধকল্পে বিভিন্ন কাস্টম হাউস ও দপ্তরের জন্য ৬টি কন্টেইনার স্ক্যানার সিস্টেম ক্রয়, স্থাপন ও ৫ বছর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ৩টি দরপ্রস্তাব দাখিল হয়। তার মধ্যে মাত্র ১টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত একমাত্র রেসপনসিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান নকটেক কোম্পানি লিমিটেড স্ক্যানারগুলো সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৩২৭ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৬৫ টাকা।
সভায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৬ষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮৮ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার ৬৪৪ টাকা।
সভায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর নিকট থেকে ৯ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের দাম নির্ধারণ করে ৯ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে। প্রতি মেট্রিক টন ৫৭৯.৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮৫ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৭০০ টাকা।
এছাড়াও রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ৫৯১.৬৭ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮৮ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার ৬৪৪ টাকা।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশন (বিলুপ্ত)-এর নওগাঁ জেলা সদরে ১ একর সম্পত্তি ক্রেতার অনুকূলে রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন ও হস্তান্তরের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি বলে জানান তথ্য কর্মকর্তা। এছাড়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের অতিরিক্ত কাজের ড্রইং এবং ডিজাইনের জন্য একক উৎসভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি মুলতবি রয়েছে বলে তিনি জানান।