১৬ ছক্কায় সৌম্যর রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরি
ক্রীড়া ডেস্ক
লিগ জুড়ে নিজেকে খুঁজে ফিরেছেন। বড় ইনিংসের জন্য হাপিত্যেশ করেছেন। শেষ দিকে যেন সব পুষিয়ে দিলেন সৌম্য সরকার। আগের ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরির পর বাঁহাতি ওপেনার এবার উপহার দিলেন রেকর্ডের মালায় সাজানো ডাবল সেঞ্চুরি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গতকাল মঙ্গলবার আবাহনী লিমিটেডের হয়ে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১৫৩ বলে অপরাজিত ২০৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছেন সৌম্য। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি এটি। ২০১৭ সালে মোহামেডানের হয়ে রকিবুল হাসানের ১৩৮ বলে ১৯০ রানের ইনিংস ছিল আগের রেকর্ড।
ডাবল সেঞ্চুরির আগেই আরেকটি রেকর্ডে নাম লেখান সৌম্য। ইনিংসটির পথে ছক্কা মারেন ১৬টি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের যেটি এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড।
আগের রেকর্ড ছিল ১১ ছক্কার। এবারের প্রিমিয়ার লিগের আগের রাউন্ডেই প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ১১টি ছক্কা মেরেছিলেন সাইফ। ১১ ছক্কার রেকর্ড ছিল সৌম্যর নিজের ও মাশরাফি বিন মুর্তজারও।
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে আবাহনীর সামনে এ দিন ছিল ৩১৮ রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। সৌম্য আর জহুরুল ইসলামের অসাধারণ জুটিতে সেই বড় লক্ষ্যও হয়ে ওঠে মামুলি। উদ্বোধনী জুটিতেই দুজনে তুলেছেন ৩১২ রান। প্রথম উইকেটে তো বটেই, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যে কোনো উইকেটেই বাংলাদেশের সফলতম জুটি এটি।
উদ্বোধনী জুটিতে আগের রেকর্ড ছিল গত বছর আবাহনীর হয়েই এনামুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তর ২৩৬ রান। সব জুটি মিলিয়ে রেকর্ডটি ছিল এক যুগ পুরোনো। ২০০৭ সালে জাতীয় লিগের ওয়ানডে সংস্করণে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে তৃতীয় উইকেটে ২৯০ রানের জুটি গড়েছিলেন মাহবুবুল করিম ও ধীমান ঘোষ।
আগের ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ৭১ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন সৌম্য। সেদিন ছিল আগে ব্যাট করে। এই ম্যাচও হয়েছে বিকেএসপির সেই তিন নম্বর মাঠেই। তবে এ দিন চ্যালেঞ্জ ছিল আরেকটু কঠিন। ৩১৮ রান তাড়া বাংলাদেশের বাস্তবতায় যে কোনো উইকেটেই সহজ নয়। কিন্তু সৌম্যর ব্যাট হয়ে উঠল আরও অপ্রতিরোধ্য।
প্রথম পঞ্চাশে লাগে ৫২ বল। এরপর থেকে এমন গতিতে ছুটতে শুরু করেন, আর থামানো যায়নি। ৭৮ বলে করেন সেঞ্চুরি, ১০৪ বলে দেড়শ আর ১৪৯ বলে ডাবল সেঞ্চুরি।
সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে গেছে তাইজুল ইসলামের ওপর দিয়ে। এই বাঁহাতি স্পিনারকেই মেরেছেন ৭টি ছক্কা। ৪টি মেরেছেন লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদিকে। নাসির হোসেন ও ইলিয়াস সানিকে মেরেছেন দুটি করে, একটি মেহরাব হোসেনকে। তাইজুলকে ছক্কা মেরেই সৌম্য শেষ করেছেন ম্যাচ।
২০১২ সালে কুয়ালা লামপুরে এসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে কুয়েতের বিপক্ষে ১৩৫ বলে ২০৯ করেছিলেন সৌম্য। সিনিয়র ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি এটিই প্রথম।