১৪তম স্প্যান বসানোয় পদ্মা সেতুর ২ দশমিক ১ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান
(বাসস) : পদ্মা বহুমুখি সেতু প্রকল্পের মাওয়া প্রান্তে আরো একটি স্প্যান বসানো হয়েছে। শনিবার বিকেলে মূল সেতুর মাওয়া প্রান্তে ১৪তম স্প্যানটি বসানো হয়।
‘৩-সি’ নম্বর এ স্প্যানটি ১৫ ও ১৬ নং পিলারের উপর স্থাপিত হওয়ায় পদ্মা সেতুর ২ দশমিক ১ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান।
প্রথমে গত বৃহস্পতিবার ১৪তম স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও ১৫ ও ১৬ নং পিলারের কাছে প্রচুর পলি জমে থাকায় ওইদিন স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়নি। পরেরদিন শুক্রবারও পলির কারণে এটি বসানো যায়নি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের দায়িত্বশীল প্রকৗশলীদের সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত পিলার দু’টি সার্ভের পর ড্রেজিং করে পলি সরিয়ে স্প্যানবাহী ক্রেনজাহাজ আজ শনিবার যথাস্থানে নোঙ্গর করে। একইদিন বিকেল পৌণে ৪টার দিকে ক্রেনের সাহায্যে ১৪তম স্প্যানটি ১৫ ও ১৬ নং পিলারের উপর বসানোর কাজ সম্পন্ন করা হয়। কর্তব্যরত প্রকৌশলীরা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার স্প্যানবহনকারী ক্রেনজাহাজটি কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওয়ানা দিয়ে ১৫ নম্বর খুঁটির কিছু কাছে নোঙর করে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে এটি রয়াওনা হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুপুরে রওয়ানা হয়। পরে মাওয়ার কাছাকাছি পদ্মা নদীতে গত দু’দিন (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) স্প্যানসহ ক্রেনজাহাজটি নোঙ্গর করা ছিল। ড্রেজিং করে পলি অপসারণের পর আজ শনিবার দুপুরে জাহাজটি যথাস্থানে পৌঁছে স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বিকেল পৌণে ৪টায় স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হয়।
ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বহন করে যথাস্থানে নিয়ে যায় তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ক্রেনজাহাজ ‘তিয়ান ই’।
সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান,পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৪২টি খুঁটির মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯টি খুঁটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯০টি পাইল স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ৪১টি স্প্যানের এ পর্যন্ত ১৪টি স্প্যান বসেছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কো¤পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। এ সেতুর কাঠামো কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে বলে সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানান।