১৩৭ কোটি ডলার ঘুষের অর্থে বানানো পুতিনের প্যালেস!
রাশিয়ার প্রধান বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি তার এক ডকুমেন্টারিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি বিলাসবহুল প্যালেসের ভিডিও প্রকাশ করেছেন। প্যালেসটির মূল্য ১৩৭ কোটি ডলার এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঙ্কের ঘুষ হিসেবে পুতিনকে এই অর্থ প্রদান করা হয়েছে বলে দাবি করেন নাভালনি।
গত ১৯ জানুয়ারি ইউটিউবে প্রকাশিত ডকুমেন্টারিটি ৩ দিনের মধ্যেই প্রায় ৭ কোটিবার দেখা হয়েছে। গত রবিবার বার্লিন থেকে রাশিয়ায় ফেরার পরপরই নাভালনিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ভিডিওটি প্রকাশ করে নাভালনির টিম।
তবে এই প্যালেসের মালিক পুতিন নয় বলে দাবি করেছে ক্রেমলিন। কৃষ্ণ সাগরের উপকূল সংলগ্ন বিশাল প্যালেসটি সরকারি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা পাহাড়া দিচ্ছেন এমন দাবিকে ‘পুরোপুরি অর্থহীন’ বলে দাবি করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
নাভালনির ডকুমেন্টারিতে দাবি করা হয় এই সম্পত্তির এলাকা ইউরোপের দেশ মোনাকোর চেয়ে ৩৯ গুণ বড়।
নাভালনিকে সোমবার ৩০ দিনের বিচার-পূর্ব আটকে রাখা হয়েছে। তাকে দেয়া একটি সাজার প্রবেশনের শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বুধবার তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলার বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল, পরে তা পেছানো হয়।
কী আছে নাভালনির ডকুমেন্টারিতে?
পুতিনের প্যালেসটি সম্পর্কে নাভালনি যে তদন্ত করেছেন তা ডকুমেন্টারিতে উপস্থাপন করা হয়। তদন্তে দাবি করা হয়, রিসোর্ট শহর গেলেন্দজিকে বানানো পুতিনের প্যালেসটির অর্থায়ন হয়েছে অবৈধ উপায়ে। প্রেসিডেন্টের কিছু ঘনিষ্ঠ লোক এই অর্থ দিয়েছেন যাদের মধ্যে তেল কোম্পানির প্রধান ও বিলিয়নিয়াররা রয়েছেন।
‘তারা তাদের বসের জন্য এই প্যালেসটি বানিয়েছে,’ ভিডিওতে বলেন নাভালনি। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) এই ব্যক্তিগত প্যালেসটি ঘিরে ৭০ বর্গ কিলোমিটার জমির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
ডকুমেন্টারিতে এই সম্পত্তির খুঁটিনাটি অনেক বিষয় তুলে ধরা হয়। এতে একটি ক্যাসিনো, একটি আন্ডারগ্রাউন্ড আইস হকি কমপ্লেক্স ও ওয়াইন তৈরির জন্য একটি আঙ্গুরের বাগান (ভিনেইয়ার্ড) রয়েছে বলে ডকুমেন্টারিতে দাবি করা হয়।
নাভালনি বলেন, ‘এতে দুর্ভেদ্য সীমানা, নিজস্ব বন্দর, নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা, একটি গির্জা, নিজস্ব পারমিট সিস্টেম, একটি নো-ফ্লাই জোন এবং এমনকি নিজস্ব সীমানা চেকপয়েন্ট রয়েছে।’
এদিকে নাভালনির গ্রেফতারের প্রতিবাদে তার সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। শনিবার পুলিশ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে বলে জানায় রয়টার্স।