১০ পৌরমেয়র, ১৭ কাউন্সিলর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
পৌরসভার ১০ জন মেয়র, ১৭ জন কাউন্সিল এবং ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন কাউন্সিলর এবং একজন কর্মচারী মারা গেছেন।
বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে পৌরসভার কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও নিহত কর্মীদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবায় কর্মরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত অন্যান্য কর্মচারী দায়িত্ব পালনকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার।
দায়িত্ব পালনকালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে গ্রেড অনুযায়ী ১০ লাখ, সাড়ে ৭ লাখ এবং ৫ লাখ টাকা করে, আর মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা, সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা ও ২৫ লাখ টাকা করে পাবেন।
সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠ পর্যায়ে সরাসরি জনসেবায় নিয়োজিত। করোনা মোকাবেলায় লকডাউনসহ যাবতীয় জনসচেতনতামূলক কাজে প্রশাসনকে সহোযোগিতা করছে পৌরসভার জনপ্রতিনিধি, কর্মকতর্কা-কর্মচারীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের সার্বিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
“পৌরসভার যারা আক্রান্ত হচ্ছেন বা মারা যাচ্ছেন তাদের ব্যাপারে সরকারের কিংবা স্থানীয় সরকার বিভাগের কোনো পদক্ষেপ এখনও দেখা যায়নি। এতে পৌরসভার জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপ-শহরের কোটি কোটি মানুষের সেবার মান সচল রাখার স্বার্থে অবিলম্বে স্থানীয় সরকার বিভাগসহ অর্থ বিভাগকে এ ব্যাপারে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য দেশের ৩২৮টি পৌরসভার পক্ষ হতে জোরালো দাবি জানানো হচ্ছে।
পৌরসভার আক্রান্ত মেয়র
গফরগাঁও পৌরসভার এস এম ইকবাল হোসেন সুমন, পটুয়াখালী পৌরসভার মহিউদ্দিন আহাম্মেদ, দাউদকান্দি পৌরসভার নাইম ইউছুফ, কক্সবাজার পৌরসভার মো. মুজিবুর রহমান, চন্দনাইশ পৌরসভার মাহবুবুল আলম, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মো. মিজানুর রহমান, ভেড়ামারা পৌরসভার শামিমুল ইসলাম সানা, মীরকাদিম পৌরসভার শহিদুল ইসলাম শাহীন, ধুনট পৌরসভার এ জি এম বাদশাহ এবং কালকিনি পৌরসভার এনায়েত হোসেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এরমধ্যে গফরগাঁও, পটুয়াখালী এবং কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র সুস্থ্ হয়েছেন, অন্যরা চিকিৎসাধীন।
আক্রান্ত কাউন্সিলর
দাউদকান্দি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ফারুক প্রধান, দাউদকান্দি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মো. সালাউদ্দিন, কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের মো. সালাউদ্দিন, কক্সবাজার পৌরসভা ২নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান, রাজৈর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাদল মাতুব্বর, দাগনভূঞা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের জিয়াউল হক, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মফিজুর রহমান এবং পটুয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নিজামুল হক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
দাগনভূইয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন জুয়েল, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের মো. সাইফুল ইসলাম শাহীন ও ১নং ওয়ার্ডের মো. মোকলেস মিয়া, নওয়াপাড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মো. মিজানুর রহমান, চৌমুহনী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মো. আনোয়ার হোসেন এবং কুমারখালী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মো. মাহাবুবুল আলম বাবুও প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আর শ্রীমগংগল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মো. আব্দুল আহাদ, কালিয়কৈর পৌরসভার ৭, ৮, ৯ সংরক্ষিত আসনের মোসা. হাজেরা বেগম এবং কবিরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন আনোয়ার কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী
সিরাজগঞ্জ পৌরসভার টিকাদানকারী নিপা খাতুন, ফরিদা খাতুন ও সহকারী কর আদায়কারী মো. আতিকুল ইসলাম, দাউদকান্দি পৌরসভার মিন্টু মিয়া, আড়াইহাজার পৌরসভার এস এম রাজু, চৌমুহনী পৌরসভার সাবেরা সুলতানা, চকোরিয়া পৌরসভার এমএলএসএস সাহাবুদ্দিন, ভাংগা পৌরসভার সড়ক বাতি পরিদর্শক ওমর শরীফ ও টিকাদানকারী মো. মিজানুর রহমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
মীরকাদিম পৌরসভার প্রধান সহকারী মুহাম্মদ আবদুর রব, পাম্পচালক মো. আল আমীন, টিকাদানকারী সুব্রত চন্দ্র পাল, কর নির্ধারক মো. গুলজার হোসেন, বিলক্লার্ক আমিনুল ইসলাম, পাম্প চালক মো. তাফাজ্জল, জীপচালক মো. শাজাহান এবং লাইসেন্স ইন্সপেক্টর মো. শামসুল আলমও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার সহকারী কর নির্ধারক মো. মহিউদ্দিন মহিন, ধামরাই পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মী লিমা আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর পৌরসভা কার্যসহকারী মো. নাসিরুল হাসান নাননু, ফরিদপুর পৌরসভার মো. রাসেল আলী, মনোহরদী পৌরসভার অফিস সহকারী নিলুফা আক্তার, পটুয়াখালী পৌরসভার ড্রাইভার মো. মাসুদ, চৌমুহনী পৌরসভার কার্যসহকারী টিপু সুলতান, চন্দনাইশ পৌরসভার অফিস সহায়ক মো. শহীদুল ইসলাম, সীতুকুন্ড পৌরসভার টিকাদান সুপারভাইজার নিজামউদ্দিন এবং আড়াইহাজার পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাফায়েত সাদীর শরীকে কোভিড-১৯ সনাক্ত হয়েছে।
পিরোজপুর পৌরসভার টিকাদানকারী জামিউল খান, মীর্জাপুর পৌরসভার গার্ভেজ ট্রাক চালক তানভীর, ভৈরব পৌরসভার সহ-কর নির্ধারক আবুল কালাম, কক্সবাজার পৌরসভার স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুর রহিম, টেকনাফ পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী রবিউল ইসলাম, জীবননগর পৌরসভার অফিস সহায়ক মুজিবুর রহমান, শাহারাস্তি পৌরসভার পৌর সচিব তোফায়েল আহাম্মদ, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক মো. লোকমান হোসেন, চকোরিয়া পৌরসভার অফিস সহায়ক আব্দুল হামিদ, জীবননগর পৌরসভার অফিস সহায়ক মজিবুর রহমান, দুপচাচিয়া পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী শাহজাহান সিরাজ, মহেশখালী পৌরসভার বাজার পরিদর্শক আবু তাহের, কেন্দুয়া পৌরসভার সহ-কর নির্ধারক সুমন কুমার বনিক, লালমোহন পৌরসভার বিল ক্লার্ক মো. নজরুল ইসলাম এবং জামালপুর পৌরসভার বাজার পরিদর্শক আরিফ মাহমুদ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে আছেন কক্সবাজার পৌরসভার পাম্প চালক আনসারুল হক, কালিয়াকৈর পৌরসভার উচ্চমান সহকারী আ. সবুর মোল্লা, কালিয়াকৈর পৌরসভার অফিস সহায়ক হেলাল উদ্দিন, কেন্দুয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল ইসলাম জুয়েল, সোনারগাঁও পৌরসভার উচ্চমান সহকারী আহাম্মদ হোসেন, সেনবাগ পৌরসভার উচ্চমান সহকারী এ বি এম মহসিন, মনোহরদী পৌরসভার স্বাস্থ্য সহকারী হালিমা আক্তার, ছেংগারচর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী হাজী আবুল আনছার, সাভার পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী আবুল আউয়াল সাদী, বেতাগী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিন, ছাতক পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী যুবরাজ চৌধুরী শরীফ, কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামান রতন, জীপচালক আব্দুল মালিক রানা, অফিস সহায়ক দীপ্তবনিক ও গার্ভেজ ট্রাক চালক কৃতেষ দাস।
এছাড়া গেবিন্দগঞ্জ পৌরসভার স্বাস্থ্য সহকারী আনোয়ারা আফরোজ লাবনী, মীরসরাই পৌরসভার মো. মাসুম, কালকিনি পৌরসভার অ্যাকাউন্টস অফিসার রনজীত কুমার সরকার, কালকিনি পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এস এম লুৎফর রহমান রানা, কুয়াকাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজেদুল আলম, আড়াইহাজার পৌরসভার অফিস সহায়ক মো. ফারুক, উল্লাপাড়া পৌরসভা পরিচ্ছন্নকর্মী মো. আব্দুল আলীম এবং ভৈরব পৌরসভা প্রধান সহকারী মো. আল আমীন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন নয়জন।
সেনবাগ পৌরসভার নৈশপ্রহরী জয়নাল আবেদীন ফকির মারা গেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।