১০ টি উপায়ে বৃদ্ধি করুন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে তুলুন শক্তিশালী, এসব মৌসুমি রোগ-বালাই আপনাকে আর বিরক্ত করতে পারবে না। দেখে নিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলার ১০ টি কার্যকরী কৌশল।
১) খাবারে অতিরিক্ত চিনি যোগ করবেন না
শরীরের যেসব কোষ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সক্ষম, তাদের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় চিনি। এ কারণে খাবারে অতিরিক্ত চিনি মেশাবেন না। কোমল পানীয় খাওয়া বন্ধ করুন, এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এর বদলে চিনি ছাড়া ফলের রস, চা এবং সাধারণ পানি দিয়ে তৃপ্তি মেটান। এতে যেমন শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাবে, তেমনি থাকবে ভেতর থেকে পরিষ্কার।
২) স্ট্রেস নেবেন না
কিছু পরিমাণ স্ট্রেস জীবনেরই অংশ। কিন্তু এই স্ট্রেস যদি আপনাকে অসুস্থ করে ফেলে তবে বুঝতে হবে জীবন থেকে স্ট্রেস ঝেঁটিয়ে বিদায় দেবার সময় এসেছে। খুব বেশি স্ট্রেসের মাঝে থাকলে মানুষ ঠাণ্ডা, সর্দি, জ্বর এমনকি আরও গুরুতরস অব অসুখে পড়তে পারে। ক্রমাগত স্ট্রেস নিতে থাকলে শরীর কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিনে ভরে যায়, যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। স্ট্রেস বেশি নেবেন না, ধ্যান করুন, বুক ভরে শ্বাস নিন এবং যে সব কাজ বা মানুষ আপনার স্ট্রেস বাড়িয়ে চলেছে তাদেরকে জীবন থেকে ছাঁটাই করে দিন।
৩) আদা-রসুন
আদা একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ, যা শরীরকে রাখে উষ্ণ এবং ক্ষতিকর টক্সিন দেহে জমতে বাধা দেয়। বিশেষ করে ফুসফুস এবং সাইনাসের ক্ষতি হতে দেয় না আদা। আর রসুন কাঁচা খেতে পারলে তা খুবই উপকারি। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দূর করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই মশলাটি।
৪) ভিটামিন সি
এই ভিটামিনটা যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তা আমাদের সবারই জানা। অনেক তাজা ফল-মূলে পাওয়া যায় ভিটামিন সি। খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি রাখুন নিয়মিত।
৫) খাদ্যতালিকায় রাখুন কপি
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকোলি এসব সবজি মূলত আমাদের যকৃৎ ভালো রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ যকৃৎ শরীরের মাঝে থাকা বিষাক্ত পদার্থকে বের করে দেয়। এ কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব কপি খেয়ে যকৃৎ সুস্থ রাখাটা খুবই জরুরী। শুধু তাই নয়, অন্যান্য সব তাজা সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাজা মানে তাজা, ফ্রিজে এক সপ্তাহ রেখে খাদ্যগুণ কমানো সবজি নয়। যতটা সম্ভব তাজা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন।
৬) শরীর রাখুন সচল
সারা দিন ডেস্কে বসে কাজ করলে অথবা অলসতা করে শরীর অচল করে রাখাটা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ইওপরে রাখতে পারে নেতিবাচক প্রভাব। শরীর সচল থাকলে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং লিউকোসাইট (রোধ প্রতিরোধের এক ধরণের কোষ) এর পরিমাণ বাড়ায়। এর অর্থ এই নয় যে আপনাকে নিয়ম করে জিমে যেতে হবে। সে সময়টুকু না পেলে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটতে যান, বাচ্চাদের সাথে খেলা করুন এমনকি টিভির সামনে নাচুন।
৭) আরাম করে ঘুমান
ক্লান্তি থেকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা কমে যায়। শুধু তাই নয়, ইনসমনিয়া হতে পারে স্ট্রেস হরমোন বৃদ্ধির কারণ। প্রতি রাতে সময়মত ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমান, রোগে ভোগার সম্ভাবনা কমবে।
৮) স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন
বেশি ওজন যেমন খারাপ তেমনি খুব কম ওজনও কিন্তু খারাপ। নিজের শরীরের গঠন অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর একটি ওজন বজায় রাখুন সঠিক খাদ্যভ্যাস, ব্যায়াম এবং স্ট্রেসমুক্ত জীবনযাপনের মাধ্যমে।
৯) প্রিয় মানুষদের সান্নিধ্যে থাকুন
পরিবারের মানুষ এবং বন্ধুদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলে তা শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে- এটা পরীক্ষিত সত্য। একাকী থাকেন যারা, তাদের চাইতে বন্ধুদের মাঝে থাকা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয় শক্তিশালী।
১০) মনকে রাখুন সুস্থ
মন সুস্থ রাখুন, শান্ত রাখুন, শরীর নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলার শক্তি পাবে। এর জন্য ধ্যান করতে পারেন। শুধুহ তাই নয়, নিয়মিত প্রাণ খুলে হাসার অভ্যাসটাও আপনার উপকারে আসবে। এতে আপনার শরীর ধরে নেয় আপনি সুখি, এবং তাতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ভালো থাকে। বিশ্বাস না হলে নিজেই চেষ্টা করে দেখুন না!