December 24, 2024
আঞ্চলিক

হোম কোয়ারেন্টাইন মানছে না কেউ, মুকসুদপুরে করোনা আতঙ্ক

 

মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ইতালী, সিঙ্গাপুর, ইরাক, কাতার, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ১২ জন প্রবাসী নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। বুধবার পর্যন্ত মুকসুদপুরে প্রবাসী ৭জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও একদিন পর অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।

এদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে আসলেও নিজ গ্রামে এসে হোম কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনা মানছেনা। এলাকার জনসমাগম এলাকাগুলো ছাড়াও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ঘোরাফেরা-দাওয়াত খাচ্ছে  কোন বাধা ছাড়াই। এছাড়াও মসজিদে নামাজ আদায়, চায়ের দোকানে আড্ডা, জনসমাগম স্থানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে তাদের। এতে করে উপজেলার সর্বত্র এখন করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রবাসী এসব ব্যক্তিদের শৃংখলার মধ্যে আনা এবং হোম কোয়ারেন্টাইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মুকসুদপুরের প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ দায়সারাভাবে কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারনে উপজেলার সর্বত্র দেখা দিয়েছে প্রবাসী আতঙ্ক। অনেক স্থানে এলাকাবাসী না বুঝে প্রবাসী ব্যক্তির বাড়ি আসছে তাদের দেখতে ও খোজ খবর নিতে এ কারনে এই ভাইরাস আরো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ২১ জন প্রবাসী হোম  কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মহারাজপুর, ননীক্ষীর ও ভাবড়াশুর ইউনিয়নে। মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি দেশে ফেরা প্রবাসীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড় পর্যবেক্ষন এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত¡াবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন। তাদের মধ্যে করোনার কোন লক্ষণ মেলেনি। তিনি আরো জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি, কৃষ্ণাদিয়া এবং গাড়লগাতীতে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষার কোন পদ্ধতি নেই তবে কোন প্রবাসীর মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষন প্রকাশ পেলে তাকে ঢাকা প্রেরণ করা হবে।

মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ভাইরাস নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. ভীষ্মদেব মন্ডল জানান মুকসুদপুরে ২৪ ঘন্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা -৩, ২৪ ঘন্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনের ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা-২, অদ্যাবধি হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা -২১। কিন্তু বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। প্রবাসীদের ৯৫ ভাগই হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেনা। হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে সঠিক ধারনাও তাদের নেই। অনেকে আবার বাড়িতে বসে স্ত্রী-ছেলে মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। এবং তাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা আমাদের নির্দেশনা তো মানছেনই না বরং আমাদের উল্টো বেশি কথা শুনাচ্ছেন। এজন্য তারা যদি আমাদের কথামত না চলেন তাহলে পুলিশ পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন অনেকে প্রবাস থেকে দেশে এসে তাদের তথ্য আমাদের থেকে গোপন করছেন। যার কারনে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আলী জানান প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টাইন কেউ মানছে না এজন্য ইউপি চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের নিয়ে বিকালে এক জরুরী সভা করা হয়েছে। এবং যে নির্দেশনা না মানবে তার বিরুদ্ধে জরিমানাসহ শাস্থিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *