হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির হার কমেছে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাজধানী ও বাইরের জেলাগুলোর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ার গতি কমেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে ২ হাজার ২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তার আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২ হাজার ৩২৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। তারও আগের ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪২৮ জন। বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ডেঙ্গু ভর্তি হতে আসা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫ শতাংশ কমেছে বলে হিসাব দেখিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুক্রবার পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৯৪৭ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৫৫ জন ডেঙ্গু রোগী। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন মোট ১ হাজার ১৫৯ জন। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ১৬৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বছরের শুরু থেকে এই পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৬৬৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার সকাল নাগাদ সারা দেশে মোট ৮ হাজার ৭৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৫ হাজার ৪৬ জন। বাকি জেলাগুলোর বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৩ হাজার ৬৮৭ জন।
সরকারি হিসেবে চলতি বছর এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুনে ১৮৮৪ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জুলাই মাসে তা এক লাফে ১৬ হাজার ২৫৩ জনে পৌঁছায়। আর আগস্টের প্রথম আট দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮ হাজার ২০৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, রোগীর সংখ্যা বাড়লেও রোগমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে গেছেন। এসব জেলায় ভর্তি হয়েছেন মোট ২৩৮ জন। আগের দিন ২৮৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছিল। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ২২৩ জন, খুলনা বিভাগে ১৪৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৬৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭০ জন, রংপুর বিভাগে ৭৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ২৯ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে গেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।
ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস এজিপ্টি প্রধানত শহরে পাওয়া গেলেও মানুষের ভ্রমণসঙ্গী হয়ে যানবাহনে করে তা পৌঁছে যাচ্ছে সারা দেশে। ফলে কোরবানির ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
সে অনুযায়ী সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। কারও মধ্যে জ্বরসহ ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা গেলে ঢাকার বাইরে যাওয়ার আগে রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে প্রধানমন্ত্রী আহŸান জানিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকার চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করলেও সংবাদমাধ্যমে আসা সংখ্যা এর কয়েক গুণ বেশি।