হামলার পর সৌদির নিরাপত্তায় নজর যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্সের
ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সৌদি আরবের তেল শিল্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর দেশটির রাডার ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স।
শনিবার বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এক নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি এবং ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লি পারস্য উপসাগরের জলসীমা সুরক্ষায় জোর দেয়ার কথাও বলেছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ওয়াশিংটন ও রিয়াদ সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের তেল উৎপাদন কেন্দ্রে বড় ধরনের ওই হামলার জন্য শুরু থেকেই তেহরানকে দায়ী করে আসছে; অথচ দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও এ সংক্রান্ত কোনো অকাট্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।
রিয়াদের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে আনা ওই হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে তেহরান।
যদিও ইরানি হুমকির কথা বলেই যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী সৌদি আরবে অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।
বাহরাইন নিরাপত্তা সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বে থাকা মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান ম্যাকেঞ্জি সৌদি আরবের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
“আরামকোর ওপর হামলা নিয়ে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য খতিয়ে দেখছি আমরা; মূলত সৌদি আরবের মাধ্যমেই এসব তথ্য প্রকাশ করা হবে। সৌদিদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে তাদের সঙ্গে কাজ করছি আমরা। এর ফলে ভবিষ্যতে এ ধরনের হুমকি মোকাবিলায় তারা আরও সক্ষম হবে,” সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি।
সৌদি আরবের ওপর ‘প্রতিদ্বন্দ্বীদের হামলাকে কঠিন করে তুলতে’ কাতার ও বাহরাইনে মার্কিন সেনা ঘাঁটির পাশাপাশি রিয়াদের দক্ষিণে প্রিন্স সুলতান বিমান ঘাঁটিতেও যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর কথা জানান ম্যাকেঞ্জি।
ফরাসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, তারা রিয়াদকে তুলনামূলক নিচ দিয়ে আসা হামলা শনাক্তে কার্যকর রাডারসহ ‘অত্যাধুনিক সতর্কতা ব্যবস্থাপনার’ বিপুল সরঞ্জাম পাঠাচ্ছেন।
“সামনের দিনগুলোতেই এটি সৌদি আরবে চলে আসবে, যেন সেগুলো অতি দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে। যদিও সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ভালোভাবে চিহ্নিত করতে আরও বিশ্লেষণ দরকার,” সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি।
মানামা সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর মিত্রদের সঙ্গে সেপ্টেম্বরের হামলার তদন্ত শেষে ইরানের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়েও পরামর্শ করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এ সম্মেলনে ইরানি হুমকি মোকাবিলার বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও পরমাণু চুক্তিসহ তেহরান বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্যও ফুটে উঠে।
চার বছর আগে স্বাক্ষরিত ওই পরমাণু চুক্তি বাঁচাতে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় দেশগুলোর তৎপরতা এখনও বিদ্যমান। ইরানের ওপর চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যের বিপরীতে ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমনেই বেশি আগ্রহী বলেও সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়েছেন ফরাসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী।