হাইকোর্টে জামিন পাননি ওসি মোয়াজ্জেম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার ফেনীর সোনাগাজী থানার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও সালমা সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত ২ জুলাই আদালতে এ জামিন আবেদন করা হয়। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গত ১৭ জুন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে আদেশ দেয়। গত ১৬ জুন শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (হত্যার শিকার) ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে গত ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন।
বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে মামলাটির বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
গত ২৭ মে মামলার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। একই দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে একই ট্রাইব্যুনালের বিচারক সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পিবিআই-এর প্রতিবেদনে বাদীসহ ১৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর মধ্যে সোনাগাজী থানার চারজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী নুসরাতের মা। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে যাওয়ার পর সোনাগাজী থানার ওসির কক্ষে ফের হয়রানির শিকার হতে হয় নুসরাতকে। নিয়ম না মেনে জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দু’জন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে মিথ্যা কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ওইদিন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল বর্বরতার শিকার চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।