হাইকোর্টসহ দেশের আদালতে করোনার কবলে ১০৭
দেশের অধস্তন আদালতের ২০ জন বিচারক ও ৫৯ জন কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ২৪ জন কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। দেশের আদালতে মোট ১০৭ জন করোনার কবলে বলেও জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
শনিবার (২০ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান এ তথ্য জানান
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা এবং দায়িত্ব পালনের সময় সারাদেশে এ পর্যন্ত অধস্তন আদালতের ২০ জন বিচারক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ২৪ জন কর্মচারী এবং অধস্তন আদালতের ৫৯ জন কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘এছাড়াও কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে আছেন আরও ৬ জন বিচারক। কোভিড- ১৯ উপসর্গ নিয়ে গত ১৮ জুন মাদারীপুর জেলা জজ আদালতের জারি কারক মো. কাউসার এবং গত ১৯ জুন নওগাঁ জেলা জজ আদালতের অফিস সহায়ক মহিউদ্দিন মোহন মৃত্যুবরণ করেন। তাদের নমুনা পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত ফলাফল পাওয়া যায়নি।’
‘সর্বপ্রথম গত ২২ মে নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ শাহাজাহান কবির এবং মুন্সীগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা দু’জন সুস্থ হয়ে কাজে যোগদান করেছেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘এই মুহূর্তে ঢাকা সিএমএইচ এর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন লালমনিরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) ফেরদৌস আহমেদ। তাকে প্লাজমা দেয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক (সিনিয়ার জেলা জজ) বেগম শামীম আহমেদ। এছাড়াও জয়পুরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মো. রুস্তম আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই ৫ জন বিচারক ব্যতীত অধস্তন আদালতের অন্য ১৫ জন বিচারক বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হলেন- ১. কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) কিরণ শংকর হালদার ২. ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক ৩. আইন মন্ত্রণালয়য়ের উপ সচিব (জেলা জজ) এস. মোহাম্মদ আলী ৪. কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম ৫. বরিশালের অতিরিক্ত জেলা জজ মুহাম্মাদ মাহবুব আলম ৬. সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ পারভেজ ৭. নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ জামান ৮. কুড়িগ্রামের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তৈয়ব আলী ৯. নেত্রকোনার সহকারী জজ মো. মেহেদী হাসান ১০. চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে ১১. চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমান ১২. নোয়াখালীর হাতিয়া চৌকি আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিট্রেট মো. নিজামউদ্দিন ১৩. ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ তসরুজ্জামান এবং ১৪. খাগড়াছড়ির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান ১৫. ঢাকা ডিপিডিসির স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রেজমিন সুলতানা।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে করোনা আক্রান্ত বিচারক এবং কর্মচারীর চিকিৎসা বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা জজদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং মাঝে মাঝে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হচ্ছে।’
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কোভিড-১৯ সংক্রান্তে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারকদের কোভিড-১৯ জনিত চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আরেকটি কমিটি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।