হলি আর্টিজান মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২৭ মার্চ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা মামলায় ৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ২৭ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত। সাক্ষিরা হলেন, নিহত ওসি সালাউদ্দিনের স্ত্রী রেমকিম, কেয়ারটেকার শরিফুল, আবদুর সবুর খান, নুরজাহান ও দাউদ ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের ওই ৫ জনের সাক্ষগ্রহণ সম্পন্ন হয়। বিচারক মো. মজিবুর রহমান ২৭ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ৫ জনের সাক্ষ্য হাজিরা দেন।
ওসি সালাউদ্দিনের স্ত্রী রেমকিম আদালতকে জানান, ঘটনার পর খবর পেয়ে তিনি হলি আর্টিজান বেকারিতে যান এবং ওসি সালাউদ্দিনের মরদেহের সুরাহতল রিপোর্ট তৈরি করলে তাতে তিনি স্বাক্ষর করেন।
গাড়ি চালক শরিফুল আদালতকে জানায়, সেই রাতে ৪ জন বিদেশি নাগরিক নিয়ে সেখানে যান এবং কিছু সময় পর বিকট শব্দ শুনতে পান। এছাড়া মারা যাওয়ার কারণে মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া আসামি তামিম ওরফে ইসমাল হোসেনর বাড়ির মালিক নুর জাহান, কেয়ারটেকার দাউদ ও আবির এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
গত ১২ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনের কারণে বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। এ মামলায় মোট সাক্ষি ২১১ জন। মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
গত ৬ ফেব্র“য়ারি ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে নিহত এসি রবিউল ইসলামের ছোটভাই শামসুজ্জামান ও খালাতো ভাই আনোয়ার হোসেন এবং রেস্তোরাঁর ক্রেতা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভীনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই রেস্তোরাঁয় হামলার পর অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন ডিএমপির তৎকালীন এসি রবিউল ও ওসি সালাউদ্দিন। গত ২৯ জানুয়ারি হলি আর্টিজান বেকারির হিসাব রক্ষক আরিফ হোসেন সাক্ষ্য দেন।
রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করা ওই ঘটনায় জঙ্গিরা সেই রাতে ২০ জনকে হত্যা করে; যাদের ৯ জন ইতালি, ৭ জন জাপান, ৩ জন বাংলাদেশ এবং একজন ভারতের নাগরিক।
এছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলায় দু’জন পুলিশ সদস্যও প্রাণ হারান। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী পাঁচজনও নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়; যাকে পরবর্তীতে হলি আর্টিজানের কর্মচারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন- হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। বৃহস্পতিবার কারাগারে থাকা সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত বছরের ২৩ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তবে আলোচিত হলেও ওই ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমকে চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট আট আসামির বিরুদ্ধে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করার পর ২৬ নভেম্বর এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
এদিকে স¤প্রতি এ মামলার পলাতক আসামি মামুনুর রশিদ ওরফে রিপনকে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে গাজীপুরের বোর্ডবাজারের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। আর শরিফুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সবুর খান ওরফে হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে খালেদকে ২৫ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থেকে গ্রেফতার করা হয়।