হঠাৎ ভূমি অফিসে মন্ত্রী, বেকায়দায় সার্ভেয়ার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পূর্বঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রামে ভূমি অফিসে গিয়ে সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ শুনে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শাতে বললেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। পরবর্তীতে এ ধরনের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে একজন সার্ভেয়ারকে সতর্ক করেছেন তিনি। গতকাল রবিবার সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় আকস্মিক হাজির হন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি দেখতে এখানে এসেছি। প্রতিমন্ত্রী থাকার সময়ও এখানে এসেছিলাম। আগের চেয়ে পরিস্থিতি বেটার মনে হয়েছে। নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীদের মধ্যে এখনো ‘অনেক সমস্যা’ রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, উপরের পর্যায়ে অনেক স্বচ্ছতা এসেছে। আমার মন্ত্রণালয়েও অনেক ঠিক হয়েছে। নিচের লেভেলের কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতি বেশি। এ সময় সেবা নিতে ওই অফিসে আসা কালামিয়া বাজার এলাকার আবদুল মোতালেব এবং বাঁশখালী উপজেলার শিহাব উদ্দিন মন্ত্রীর কাছে তাদের হয়রানির কথা তুলে ধরেন।
মন্ত্রী তখনই এলএ শাখার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বিদর্শী সমব্যোধি চাকমা ও সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমাকে ডেকে কারণ জানতে চান। সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমাকে সর্তক করে তিনি বলেন, পরবর্তীতে এমন অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের চেক নিয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে উলেখ করে মন্ত্রী বলেন, মেকানিজম বের করছি কী করা যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের সরাসরি চেক দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা দালালদের হাতে যাচ্ছে। কীভাবে হচ্ছে তা বুঝছি না।
ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করার জন্য এই অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতি চালুর কথা উলেখ করে তিনি বলেন, আবেদনের পর টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে এবং সেখানে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এখানে এসেছি, কিছু কমপ্লেইন আছে। আশা করি সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে তা সমাধান করা হবে।
এই শাখায় সরকারি সেবার মান নিশ্চিতে দপ্তরে উপস্থিত ভূমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, হয়রানি যাতে না হয় সেভাবে কাজ করতে হবে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’। আমরা নিজেরাও চাই জনগণ যাতে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়।
এই অফিসে দালালদের ঢুকতে দেওয়া হয় না দাবি করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, এলএ শাখায় বাইরের একটি চক্র রয়েছে। দালালরা অফিসে ঢোকে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই শাখার সবার উদ্দেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ বলেন, হয়রানি ও দুর্নীতি এখানে থাকতে পারবে না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘মাইন্ড সেটআপ’ ও কাজের ধরন পাল্টাতে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আকস্মিক পরির্দশন এভাবে চলতে থাকবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মমিনুর রশিদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।