সড়কে নিহত চার শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতিপূরণের রুল
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও চট্টগ্রামে জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চার শিক্ষার্থীর পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়। নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চেয়েছে আদালত।
আর আপাতত নিহত চারজনের প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে এক লাখ টাকা করে দিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, যোগাযোগ সচিব ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল।
গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী, ১৬ জানুয়ারি এক কলেজ শিক্ষার্থী এবং ২৮ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়। চার শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করা হয়।
মঙ্গলবার আদেশের পর আইনজীবী হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ওই তিন দুর্ঘটনার প্রতিবেদন অথবা মামলার নথি, নিহতদের নাম পরিচয়, চালক ও পরিবহনগুলোর মালিকের পরিচয় দাখিল করতে বলেছে আদালত। মোটরযান অধ্যাদেশের সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী বাস, ট্রাকসহ মোটরযান চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণে ব্যর্থতা এবং দুর্ঘটনার পর মামলা না করা ও চালকদের গ্রেপ্তার না করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে হাই কোর্টের রুলে। পাশাপাশি সকল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে সমান হারে অন্তবর্তীকালিন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদশর্ক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনারসহ ১৪ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি মোড়ে কভার্ড ভ্যানের চাপায় চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সোমা বড়ুয়ার মৃত্যু হয়। এর ছয় দিনের মাথায় গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের ধনিয়ালাপাড়া এলাকায় অটোরিকশা ও টেম্পোর মুখোমুখি সংঘর্ষে সরকারি কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র কাজী মাহমুদুর রহমানের মৃত্যু হয়।
তারপর ২৮ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরের মোলারপুল এলাকায় বাবার সঙ্গে মোটর সাইকেলে করে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায় দুই ভাইবোন আফসার হোসেন (৮) ও ফাতিমা আফরিন (১০)।
ফাতিমা হাসনাবাদের কসমোপলিটন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে পঞ্চম শ্রেণিতে আর আফসার একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। ক্ষতিপূরণের জন্য এই রিট মামলাটি আগামী ১৫ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য আবার হাই কোর্টে উঠবে বলে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হালিম জানিয়েছেন।