স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজে প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ প্রকাশ
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, সে কারণেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি একথা বলেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে মাস্ক কাণ্ড, রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারিসহ নানা বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজের সমালোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে বা অধিদপ্তর নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। কিন্তু একটা কথা তো এটা স্বীকার করতে হবে যে যখন যেটা নির্দেশ দিয়েছি … আমি বলেছি এটা ইমোর্জেন্সি আগে করতে হবে, জিনিস কিনতে হবে, মানুষের চিকিৎসা দিতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে।
“তারা কিন্তু সেইভাবেই কাজ করেছে। তারা কাজ করেছে বলেই কিন্তু আমরা এই করোনাটাকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।”
মহামারীর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করে যাওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এই সময় ভার্চুয়ালি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, অথচ ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণার দেওয়ার পর তা নিয়ে ব্যাঙ্গোক্তি সহ্য করতে হয়েছিল।
“কত রকমের কথা আমাদের শুনতে হয়েছে। কিন্তু আজকে তো দেখা গেল সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই আমরা কিন্তু দেশটাকে সচল রাখতে পেরেছি, মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগটা আমরা রাখতে পেরেছি।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মহামারীসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় তার দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এক হয়ে কাজ করছে বলে পরিস্থিতি মোকাবেলা সহজ হয়েছে।
“আমার মনে হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল বলেই মানুষ এই সহযোগিতাটা পেয়েছে। এখানে যদি অন্য কেউ থাকত, কত যে মানুষ মারা যেত, কত যে দুরবস্থা মানুষের হত, তা ভাষায় বলা যায় না।”
মহামারি থেকে অর্থনীতিকে উদ্ধারে সরকারি প্রচেষ্টা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশে আমাদের কোনমতে যেন অর্থনীতিটা থেমে না যায়।
“৫ লক্ষ কোটি টাকার উপর বাজেট দেওয়া কিন্তু একটা কঠিন কাজ ছিল। তবুও আমরা সেটা করেছি এইজন্য যে আমরা বলেছি আমরা খরচ করব সীমিত আকারে। যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু। কিন্তু আমরা বাজেটটা ঠিক রেখেছি যেন আমাদের অর্থনীতিটা গতিশীল থাকে।”
মহামারীতে নানা প্রণোদনা দেওয়ার পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
মহামারীর শুরু থেকেই খাদ্য উৎপাদন ঠিক রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কারণ এই মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী একটা অর্থনৈতিক মন্দা আসবে। আর মন্দার সাথে সাথে কিন্তু দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
“কিন্তু বাংলাদেশে যেন খাদ্যাভাব দেখা না দেয়। সেইজন্য কৃষক যেন মাঠে থাকে। ফসল যেন উৎপাদন হয়। উৎপাদিত ফসলটা আমাদের কাছে থাকলে অন্তত খাবারের অভাবটা যেন না হয়।”
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ হারানো প্রবাসী কর্মীদের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ তুলে ধরার পাশাপাশি তাদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণার কথাও জানান তিনি।