স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফোন ধরেন না, চিঠির উত্তর দেন না: জিএম কাদের
স্বাস্থ্য খাতের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফোন না ধরার অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। শুধু ফোনই নয়, চিঠি দিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী উত্তর দেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি
শনিবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বিরোধী দলের উপনেতা এসব অভিযোগ করেন।
নিজ নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাটের স্বাস্থ্যসেবার দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি পদে পাদাধিকার বলে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা সঠিকভাবে কাজ করেন না বলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হচ্ছে না— দুই দিন আগে সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্তব্যটি করেন। এ কথাটার কারণে মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। যাদের এভাবে সভাপতি করা হয় তাদের কোনো সুনিদির্ষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয় না। তারা নিজ উদ্যোগ হাসপাতালের সমস্যা নির্ধারণ করেন এবং সমাধানের প্রচেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যসেবা কমিটিকে কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। নিয়ম, আইন বা অর্থ বরাদ্দ এমন কিছুই থাকে না যাতে করে তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন। প্রায় সময় সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপ দিতে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। ফলে, তাদের প্রধান কাজ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরাসরি মন্ত্রীকে খুশি করে কাজটি বাস্তবায়ন করা। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
টেলিফোন করলে তারা ধরেন না। আমি মন্ত্রীকে ৬-৭ বার টেলিফোন করেছি। উনি টেলিফোন ধরেন না। ওনার বাবা আমাদের দল করতেন, ওনার বাবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওনার কাছ থেকে এরকম ব্যবহার পেয়েছি। পত্র দিলে কোন উত্তর বা সমাধান মেলে না। সংসদ সদস্যরা অনেকেই তখন বাধ্য হয়ে সমাধানের লক্ষ্যে বিষয়গুলি সংসদে তুলে ধরেন। যদিও এরপর সমাধান তেমন একটা পাওয়া যায় না, বলেন জি এম কাদের।
তিনি আরও বলেন, রংপুর হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনের পানি বিশুদ্ধকরণ অংশটি নষ্ট ছিল দীর্ঘ প্রায় আট মাস। ফলে ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিন অকজো হয়ে পড়েছিল। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৬ লাখ টাকা দান উঠিয়ে এটা মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৫টির মধ্যে ১০টি কাজ করছে না। বারবার মন্ত্রণালয়ে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রায় দুই তিন মাস আগে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সচিবকে মেরামতের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীর পাশাপাশি করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল ধরনের রোগীকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু যন্ত্রপাতি ও ওষুধের চাহিদা দিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চাহিদা পত্র দিয়েছে। লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাহিদাকৃত যন্ত্রপাতি ও ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি।