স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের কেউ আ’লীগের সদস্য হতে পারবে না
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সা¤প্রদায়িক শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন তিনি।
আগামী ২১ জুলাই শুরু হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমকে সামনে রেখে ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, যুদ্ধাপরাধী বা জামায়াতসংশ্লিষ্ট পরিবারের কারও সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে দলের কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা।
জাবাবে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। এদেরকে মনোনয়ন দেওয়া, সদস্য করার ব্যাপারে দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর, এখানে কোন আপসকামিতার প্রশ্নই উঠে না।
পরিবারের ব্যাপারটা তো আমরা অবশ্যই সিরিয়াসলি নেব। যুদ্ধাপরাধীর পরিবার হলে সেখানে আমরা সদস্য সংগ্রহ করি না, তারা সদস্য পদ নিতে পারে না, এমনটাই আমাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের নীতিমালায় স্পষ্ট আছে।এখানে আমরা অটল।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, পারিবারিকভাবে সা¤প্রদায়িক শক্তি যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে, তাদের কেউ যদি আসতে চায় সেখানে তো আমাদের প্রশ্ন থাকতেই পারে, আমাদের দেখতে হবে। এখানে আমাদের আদর্শ এবং মূল্যবোধের প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্ন। এখানে আমরা আপস করতে পারি না। যুদ্ধাপরাধটা এখানে ফোকাস। এখানে আমাদের অবস্থান যা ছিল এখনও তাই।
বিএনপি-জামায়াত পরিবারের কেউ যদি আওয়ামী লীগে আসতে চায়, দলের অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে চিন্তা-ভাবনা করে আমরা ঠিক করি, আমাদের দলের যে আদর্শ, যে চিন্তা-ভাবনা, অন্য কোনো দল থেকে বিশেষ করে সা¤প্রদায়িক যে বিষয়টা, এটাকে আমরা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
কাজেই সা¤প্রদায়িকতার মধ্যে যারা আছে, সা¤প্রদায়িক দৃষ্টিকোন থেকে আমরা যাদের দেখি, তারা জামায়াত হোক, বিএনপি হোক, আমরা একইভাবে দেখি। অভিযোগ আছে, গত দশ বছরে বিএনপি-জামায়াত থেকে অনেক অনুপ্রবেশ আওয়ামী লীগে ঘটেছে।
তাদের সদস্যপদ নবায়ণের বিষয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, গতবার আমরা নবায়ণ করিনি। গত বছর যাদের আমরা নবায়ণ করেছি, সেই তালিকায় কোনো স্বাধীনতাবিরোধী বা স¤প্রদায়িক শক্তির অনুপ্রবেশ হয়নি, এর কোনো প্রমাণও নেই। অনুষ্ঠানে বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বরগুনা শহরে প্রকাশ্য রাস্তায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার সন্দেহভাজনরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের পক্ষ থেকে স্ট্যান্ডিং ডিরেকটিভ সব জায়গায়ই আছে।
দলের পক্ষ থেকে কোন নমনীয়তা ও শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। যত ক্রিমিন্যাল অফেন্স সংগঠিত হয়েছে, এসব ঘটনায় দলীয় সংশ্লিষ্টতা যদি থেকে থাকে এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত, তিনি যত ইনফ্লুয়েন্সিয়ালই হোন না কেন, দল কিন্তু ব্যবস্থা নিয়েছে।বিভিন্ন অভিযোগে দলের লোকরা ছাড় পাননি। বরগুনায় যদি দলীয় কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, অবশ্যই তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এখানে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর, এটা আমি বলতে পারি।