স্বল্প পরিসরে কোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত স্থগিত
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চেম্বার কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগে একটি বেঞ্চ চালুর ঘোষণা আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া সপ্তাহে দুইদিন জজ কোর্ট খোলার বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতাও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে এবং অন্যান্য আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন মর্মে জানানো হয়।
অনিবার্যকারণবশত সুপ্রিম কোর্টের গত ২৩ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কঠোর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অতীব জরুরি বিষয়গুলো শুনানির নিমিত্তে ছুটিকালীন সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে বসবেন।
তাছাড়া ছুটিকালীন হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সব অধিক ক্ষেত্রের অতীব জরুরি বিষয়গুলো শুনানির নিমিত্তে হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। আদালত পরিচালনার কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব অনুসরণের নিয়ম-কানুনের বিষয়ে বিচারপতিরা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।
এছাড়া গত ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের চলমান পরিস্থিতিতে দেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজকে এবং মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজকে ছুটিকালীন তাদের সুবিধা মতো প্রতি সপ্তাহে যেকোনো দুইদিন কঠোরভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরি জামিন শুনানির জন্য সীমিত আকারে আদালত কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হলো।
‘চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তার নিয়ন্ত্রণাধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ছুটিকালীন সুবিধা মতো প্রতি সপ্তাহে দুইদিন কঠোরভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরি জামিন শুনানির জন্য সীমিত আকারে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো।’
নোটিশে আরও বলা হয়, একটি মামলার জামিন শুনানিতে কেবল একজন আইনজীবী অংশগ্রহণ করবেন। আদালত প্রাঙ্গণে শারীরিক দূরত্বের নিয়মকানুন কঠোরভাবে অনুসরণ করা না হলে কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে।
‘আদালত প্রাঙ্গণে এবং এজলাস কক্ষে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং কার্যকরী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে জেলা ও দায়রা জজ/মহানগর দায়রা জজ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।
জামিন শুনানিকালে কারাগারে থাকা আসামিদের কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে বা অন্য কোনোভাবে আদালত প্রাঙ্গণে ও এজলাস কক্ষে হাজির না করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নোটিশে।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সঙ্গে মিল রেখে আদালত অঙ্গণও বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি প্রয়োজনে প্রত্যেক জেলায় একটি করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট খোলা রয়েছে।
এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বল্প পরিসরে কোর্ট চালু করতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেছেন। তখন প্রধান বিচারপতি তাদের বলেছিলেন, তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
এরমধ্যে আবার সুপ্রিম কোর্টের ১৪ জন আইনজীবী সীমিত পরিসরে এক/দু’টি বেঞ্চ কিংবা অনলাইনে কোর্ট খোলার জন্য প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন। করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে একটি বেঞ্চ গঠনে অপর দুই আইনজীবীও চিঠি দিয়েছেন।
এছাড়া ঢাকা বারের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও প্রধান বিচারপতি বরাবরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আংশিক জজ কোর্ট খোলার আবেদন করেছেন।