স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন ক্রিকেটার আল আমিন
স্ত্রী ইসরাত জাহানকে তালাকের নোটিশ দিয়েছেন বলে আদালতে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার আল-আমিন হোসেন।
বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মামলার জবাব দাখিলে এ দাবি করেন তিনি।
এ দিন মামলাটিতে শুনানির দিন ধার্য ছিল। আল আমিন আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করেন।
জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট স্ত্রীকে তিনি তালাকের নোটিশ দিয়েছেন। তিনি মোহরানা ও ইদ্দতকালীন খোরপোষ দিতে রাজি আছেন। আর দুই সন্তানের খরচ তিনি নিয়মিত দিচ্ছেন।
তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শামসুজ্জামান বলেন, আমরা মামলা করেছি ভরণপোষণ ও শান্তিপূর্ণভাবে সংসার করার দাবি আদায়ে। এখন আল আমিন বলছেন, তিনি বাদীকে তালাক দিয়েছেন। অথচ সেই মর্মে কোনো ডকুমেন্টস দাখিল করেননি। তিনি বলেছেন দুই ছেলের ভরণপোষণ দিচ্ছেন। অথচ আমাদের কাছে প্রমাণ আছে বড় ছেলের স্কুলে ৫০ হাজার টাকা টিউশন ফি বাকি আছে।
আদালত জবাবের বিষয়ে ৫ দিন পর শুনানির জন্য রেখেছেন।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পান আল আমিন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও মাসিক ভরণপোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবি করে গত ৭ সেপ্টেম্বর আল আমিনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন স্ত্রী ইসরাত জাহান। মামলায় পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ ও বিধিমালা ২০১৩ এর ১৫(১)(ক)(খ)(গ)/১৬ (৫)(৬) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মামলাটি আমলে নিয়ে আল আমিনকে ২৭ সেপ্টেম্বর হাজির হওয়ার সমন দিয়েছিলেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল আমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজি ভার্সনে কেজিতে পড়ালেখা করছে। বেশ কিছুদিন যাবত আল আমিন স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপোষণ দেন না এবং খোঁজও না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন, যোগাযোগও করেন না।
আরও বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল আমিন তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং সংসার করবে না বলে জানায়। ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ইসরাত জাহান। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলাও হয়।
সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর আল আমিন তার মায়ের মাধ্যমে জানান, ইসরাতের সাথে সংসার করবেন না এবং সন্তানদের ভরণপোষণ দেবেন না। প্রয়োজনে বাসা থেকে বের করে দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেবেন। পরকীয়ায় আসক্তির কারণে তিনি এ কাজ করেছেন এবং একজন মহিলার সঙ্গে নিজের ছবি ইসরাতের কাছে পাঠান।
মামলায় বলা হয়, আল আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর যাবত আসামি বাদীর খোঁজখবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। এ কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণপোষণ দাবি করে মামলাটি দায়ের করেছেন। জীবন ধারণের জন্য মাসিক ৪০ হাজার টাকা, দুই সন্তানের ভরণপোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়াবাবদ ৬০ হাজার টাকা আল আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় বলা হয়।