সৌদি আরব থেকে আগ্রহীদের পর্যায়ক্রমে ফেরত আনা হবে
ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশি শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে দেশে আনার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সৌদি আরব সম্মতি প্রকাশ করেছে।
রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। সোমবার (১৫ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, কোয়ারেন্টিন সুবিধা নিশ্চিত করতে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরতে আগ্রহী প্রবাসী শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে দেশে আনা হবে। তবে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার ক্ষেত্রে আটকে পড়া উমরা হজ্জ পালনকারী, সেদেশে অধ্যয়নরত ছাত্র এবং মহিলা গৃহকর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও মৎস্য চাষে বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিকদের কাজে লাগাতে অনুরোধ করেছেন ড. মোমেন। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কৃষি উৎপাদনে সৌদি আরবের কোম্পানি সে দেশের বাইরে অন্য দেশেও বাংলাদেশের দক্ষ কৃষি শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন। সৌদি আরবে অন্যখাতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের কৃষিখাতে কাজে লাগানোর অনুরোধ করেন ড. মোমেন। তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তিতে বিপুল সংখ্যক দক্ষ বাংলাদেশিদের সৌদি আরব কাজে লাগাতে পারবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিক এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষদের কাজে লাগানোর বিষয়ে ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ উৎসাহ প্রকাশ করেন।
এসময় সৌদি আরবকে বাংলাদেশ থেকে হালাল মাংস আমদানির আহ্বান জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ প্রকল্প স্থাপন করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে উন্নত সবজি, পিপিই আমদানির সুযোগ আছে বলেও জানান ড. মোমেন।
ওআইসির সদস্য দেশগুলোর ওপর করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ, অর্থনীতি পূনরুদ্ধার ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জীবন ও জীবিকা রক্ষা এবং কোভিড রেস্পন্স অ্যান্ড রিকোভারি ফান্ড গঠনের বিষয়ে আলোচনার জন্য ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বিশেষ ভার্চ্যুয়াল সভা আয়োজনের বিষয়ে সৌদি আরবের সহায়তা চান ড. মোমেন। এ সভা আয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রবাসী শ্রমিকরা কর্মহীন হলে তাদের প্রশিক্ষণসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোভিড রেস্পন্স অ্যান্ড রিকোভারি ফান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে এসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রেও সৌদি আরবের সহযোগিতা চান ড. মোমেন। এ বিষয়ে সৌদি আরবের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। এসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা বিষয়ে সৌদি আরবের অব্যাহত সাহায্যের জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তাছাড়া দেশটিতে করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সার্বিক সহযোগিতার জন্যও সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ দেন ড. মোমেন।