সোশাল মিডিয়ায় যা খুশি করার দিন শেষ: জব্বার
সোশাল মিডিয়ায় গুজবসহ যে কোনো তথ্য নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা সরকার আগামী সেপ্টেম্বরেই অর্জন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার
ফেইসবুক, ইউটিউবসহ সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো বন্ধে সরকার উদ্যোগী হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধে সফল হচ্ছিল না।
শনিবার ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগের প্রচার সেল আয়োজিত ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর, তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ প্রসঙ্গ তোলেন মোস্তফা জব্বার।
তিনি বলেন, ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা অর্জন করলেও ফেইসবুক-ইউটিউবে সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা এতদিন আসেনি, যা একটি সমস্যা ছিল সরকারের জন্য।
“সমস্যা হচ্ছে যখন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, অথবা ভিডিও প্রচার করা হয়, সেই ক্ষেত্রে তা্ৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এর কারণ হচ্ছে, বিশেষ করে ফেইসবুক বা ইউটিউব, এই দুটি প্রতিষ্ঠানই মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এটা তাদের আমেরিকান কমিউনিটির স্ট্যান্ডার্ড মেনে কাজ করে থাকে। আমরা সরাসরি তাদের হস্তক্ষেপ করতে পারি না।
“আপনাদের জন্য সুখবর হচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাস অতিক্রম করার পরে আমরা এই ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা অর্জন করব। অর্থাৎ কেউ ইচ্ছে করলেই যা খুশি তাই সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যবহার করতে পারবে না, প্রচার করতে পারবে না।”
অর্থাৎ এতদিন ফেইসবুক কিংবা ইউটিউবে কোনো তথ্য আটকাতে হলে পুরো অ্যাপটিই বন্ধ করতে হত সরকারকে, সেপ্টেম্বরের পর তা না করে যে তথ্য আটকাতে চায়, শুধু তা আটকে দিতে পারবে সরকার।
মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ সোশাল মিডিয়ায় গুজব কিংবা ভুয়া তথ্যের সমস্যার দিকটি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন,“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব এটি একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা তা নয়। কম্বোডিয়ায় গিয়েছিলাম কদিন আগে, সেখানেও মূল আলোচ্য ছিল, কীভাবে এই গুজব প্রতিরোধ করা যায়।
“আমরা চাই, মানুষের অধিকার অবারিত থাকুক। কিন্তু মানুষের অবারিত অধিকার চর্চা করতে গিয়ে যেন অন্যের অধিকার খর্ব না হয়, কিংবা অন্যের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব না হয়, কিংবা রাষ্ট্রে হানাহানি সৃষ্টি না হয়, সমাজে অস্থিরতা না হয়, সেটা আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।”
মোস্তফা জব্বার বলেন, “২০০৮ সালে সোশাল মিডিয়া নামে কিছু ছিল না। এখন যে অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, সোশাল মিডিয়া ছাড়া কারও দিন কাটে না।
“বহু খবর আছে, যেগুলো মূলধারার গণমাধ্যমে আসত না, সেগুলো সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে যাচ্ছে। মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে।”
ইন্টারনেটে নাগরিকদের বিচরণ নিরাপদ রাখতে রাষ্ট্রের ভূমিকার উপর জোর দেন জব্বার।
তা করতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচনে কেউ গুজব ছড়াতে সক্ষম হয়নি। ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্ন সাইট বন্ধ করা হয়েছে।
“কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই গুজব বা মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে কিছু কিছু অনলাইন পোর্টাল আছে, যেগুলো বন্ধ করা একটু দুরূহ হয়ে যায়। অনলাইনের নিবন্ধনটা শেষ হলে, বৈধ তালিকা পেলে, বাকিগুলো আমরা বন্ধ করে দিতে পারব।”
ইন্টারনেট ব্যবহারে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন জব্বার।
“বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোকার ফসল পোকায় খায়। অনেকে কমপ্লেইন করে, আমার আইডি হ্যাক হয়েছে, এটা হয়েছে, সেটা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজে যদি সতর্ক না থাকেন, এটা আপনার পরিণতি। নিজে যদি সতর্ক থাকেন, কতগুলো বেসিক নিরাপত্তাগুলো মেনে চললে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মেরিনা জাহান সভায় তরুণদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।