November 25, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান

সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ দেশের যে কোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি ইউনিটকে পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

৪, ১২ ও ২০ ফিল্ড, ৫ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৫ ও ৭ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ১ ও ২ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন, আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ এবং এনসিও একাডেমির জাতীয় পতাকা (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) প্রদান এবং মুজিব রেজিমেন্ট ও রওশন আরা রেজিমেন্ট এর নতুন পতাকা প্রদান করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এসব ইউনিট প্রধানদের হাতে পতাকা তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবে।

বিভিন্ন জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলাসহ দেশের আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন তথা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অপারেশন কোভিড শিল্ড’- এর মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সদস্যগণ করোনা প্রতিরোধে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

শান্তি রক্ষা মিশনে সেনা সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে। বিশেষ করে আমাদের সেনা সদস্যদের মানবিকতা তারা যখন যে দেশে দায়িত্ব পালন করে তখন সেদেশের সাধারণ জনগণকে মুগ্ধ করে।

পতাকা পাওয়া ইউনিটগুলোর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শক্তি- এই কথাটা বলে গেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আবহমানকাল ধরে যুদ্ধের ময়দানে জাতীয় পতাকা মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। আজ যে পতাকা আপনারা পেয়েছেন তার মর্যাদা সমুন্নত রাখা দায়িত্বও আপনাদের।

সম্প্রতি রেজিমেন্ট অব আর্টিলারিতে ৩টি আর্টিলারি ব্রিগেড, ১টি এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেড, ৫টি ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্ট, ৫টি এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি রেজিমেন্ট, ১টি ডিভিশন লোকেটিং ব্যাটারি, ১টি মর্টার রেজিমেন্ট, ১টি এমএলআরএস রেজিমেন্ট এবং ১টি স্বতন্ত্র এমএলআরএস ব্যাটারি সংযোজন করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আকাশ প্রতিরক্ষায় সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এয়ার ডিফেন্স শাখার জন্য ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল (এফ এম-৯০ স্যাম সিস্টেম) এর প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে একটি কম্ব্যাট সিমুলেটর ২০১৯ সালে সংযোজন, একই বছর এক ব্যাটারি অত্যাধুনিক ওয়েরলিকন রাডার কন্ট্রোল গান সিস্টেম ও স্কাই গার্ড-৩ রাডার সংযোজন এবং আরও ১ ব্যাটারি ওয়েরলিকন গান সিস্টেম ক্রয়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ সেনাবাহিনীর আভিযানিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জরুরি মেডিক্যাল ও রোগী স্থানান্তর সেবা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সহায়তা প্রদান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ পরিবহনসহ নানাবিধ মিশন পরিচালনায় সক্ষমতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা এই এভিয়েশন বহরে ৬টি এমআই ১৭১ শাহ, ১টি কাসা-সি২৯৫ডব্লিউ, ৪টি ডায়মন্ড-ডিএ৪০এনজি এবং ২টি বেল-৪০৭ জিএক্সআই বিমান সংযুক্ত করেছি। ভবিষ্যতে এই গ্রুপের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ সংযোজনের পরিকল্পনা করছি।

আর্মস ও সার্ভিসের সঙ্গে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স এর আধুনিকায়নেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২২ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ২৭ আরই ব্যাটালিয়ন এবং ২৩ আরই ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছি। এছাড়াও আরও ১টি এডহক সিএসসি সেল, ২টি নতুন এডহক ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ইসিএসএমই এর সাংগঠনিক কাঠামোতে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। সম্প্রতি ৬টি এলসিটি ও ২টি টিসিভি ক্রয় করেছি এবং ৫টি বিকে বার্জ এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *