সু-প্রভাতের বাস মালিক রিমান্ডে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দেওয়া সু-প্রভাত পরিবহনের বাস মালিক ননী গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিলাহ গতকাল শুক্রবার তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই শেখ রাকিবুর রহমান জানিয়েছেন।
গত ১৯ মার্চ সকালে নদ্দার বসুন্ধরা গেইট এলাকায় সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসের চাপায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার। এরপর নিরপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তার সহপাঠীরা। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ বেশ কয়েকটি দাবি পূরণের আশ্বাসে সড়ক ছাড়েন তারা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে বাস মালিক ননী গোপালকে গ্রেপ্তারের আগে বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম, কন্ডাকটর ইয়াছিন আরাফাত ও চালকের সহকারী ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই তিনজনকেও রিমান্ডে পাঠিয়েছিল আদালত। তারা সবাই এ ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, আবরারকে চাপা দেওয়ার আগে বাসটি রাজধানীর শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকার এক কলেজছাত্রীকে চাপা দেয়। তখন চালক সিরাজুলকে ধরে পুলিশে দেন বাসযাত্রীরা। এরপর ‘মালিকের নির্দেশে’ কন্ডাক্টর ইয়াছিন ওই গাড়ি চালিয়ে নেওয়ার সময় প্রগতি সরণীর বসুন্ধরা গেইটে আবরারকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম শুক্রবার ননীকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন।
তার ওই আবেদন বাতিল চেয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ইয়ার খান বলেন, দুর্ঘটনার পরে নিরাপদ স্থানে গাড়ি সরানোর কথা প্রত্যেক মালিক বলবে। আমার মক্কেল গাড়ি চালক ছিলেন না, হেলপারও ছিলেন না। তার অপরাধ নেই।
এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গাড়ির যে চালক ছিল সে আসলে বাস কন্ডাক্টর। তার লাইসেন্স ছিল না। বাসের আসল যে চালক তার লাইসেন্স ছিল হালকা গাড়ির। সুতরাং মালিকের অগোচরে এই ঘটনা ঘটতে পারে না; মালিক কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না, বলেন এসআই রাকিবুর। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক ননী গোপালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী বাস মালিক ননী, চালক সিরাজুল, কন্ডাক্টর ইয়াছিন ও চালকের সহকারী ইব্রাহীমকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।