সুন্দরবন-১০ ও মানামী লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষ, যাত্রা স্থগিত
ঢাকা থেকে বরিশালে যাত্রী নিয়ে আসার পথে এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী নামে দু’টি লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে উভয় লঞ্চের পেছনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে হতাহতের কোনো ঘটনা না ঘটলেও অল্পের জন্য যাত্রীরা রক্ষা পেয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে সার্ভে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া উভয় লঞ্চের চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ। পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশের প্রতিনিধিসহ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় দু’টি লঞ্চ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে শেষে কমিটির সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) আজমুল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ওই ঘটনায় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাঝামাঝি বাম পাশের অংশ ও মানামী লঞ্চের পেছনের ফ্যান্টারের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে কমিটি করা হয়েছে। যারা লঞ্চ দু’টি পরিদর্শনও করেছে।
পাশাপাশি উভয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেই তা মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেরামতের পর সার্ভে কর্তৃপক্ষকে দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ত্রুটিমুক্ত মনে করলে লঞ্চ দু’টি পুনরায় চলাচল করতে পারবে। এর আগ পর্যন্ত লঞ্চ দু’টির যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড চিফ সার্ভেয়ার আবু হেলাল সিদ্দিকী বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ দু’টি মেরামত করতে হবে। এরপর সেটি চলাচলের উপযোগী কিনা তা দেখা হবে।
সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার (চালক) মজিবর রহমান জানান, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে তারা বরিশাল যাচ্ছিলেন। মেঘনার ইলিশা লাল বয়া পয়েন্টে গত বুধবার (২২ জুলাই) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে সুন্দরবন-১০ লঞ্চটি পৌঁছায়। এসময় সেখানে পানি কম থাকায় তিনি লঞ্চের গতি কমিয়ে ফেলেন। কিন্তু ওই চ্যানেলের মধ্যে এমভি মানামী লঞ্চ সুন্দরবন-১০ লঞ্চকে দ্রুত গতিতে ওভারটেক করে চরে আটকে যায়। চর থেকে নামানোর জন্য ফুল স্পিডে লঞ্চটিকে পেছনের দিকে সরানো হয়। এসময় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের ওপর এমভি মানামী আছড়ে পড়ে। এতে সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাঝ বরাবর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে মানামী লঞ্চের পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মানামী লঞ্চের মাস্টার আসাদুজ্জামান এ ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ভিএইচএফ-এ তাদের লঞ্চ পেছনে যাবার খবরটি সুন্দরবন-১০ লঞ্চকে অবহিত করা হয়েছিল। পাশাপাশি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই লঞ্চ তার দেওয়া তথ্যানুসারে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর লঞ্চ দু’টি চালিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দরে নিয়ে আসা হয়। প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।